সমীক্ষার নামে তরুণীদের ছবি তুলে বাঁশদ্রোণীতে পাকড়াও মণিপুরের ২ যুবক-সহ ৩

বাঁশদ্রোণী থানায় পঞ্চসায়রের বাসিন্দা এক তরুণী কাজ দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:০৮
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

নিজেদের পরিচয় দিয়েছিলেন চিনা সংস্থার কর্মী হিসাবে। পরিচয় দিয়ে মহিলাদের ছবি তুলতে গিয়ে পাকড়াও হলেন মণিপুরের দুই যুবক-সহ মোট তিন জন। মণিপুরের দুই যুবকের এক জন সেখানকার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়কের ছেলে। তাঁর মা মণিপুরের পূর্ত দফতরের পদস্থ আধিকারিক।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত সোমবার বিকালে। বাঁশদ্রোণী থানায় পঞ্চসায়রের বাসিন্দা এক তরুণী কাজ দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ করেন। একই অভিযোগ জানান আরও কয়েক জন। প্রাথমিক তদন্তের পর জানা যায়, ওই তরুণীর সঙ্গে সুনীল খুরাইজাম সিংহ, সুরেশ জশন খোয়াইর এবং শাহিদ খান নামে তিন যুবকের পরিচয় হয়। তরুণীর কাছে তাঁরা নিজেদের নতুন একটি চিনা মোবাইল সংস্থার কর্মী হিসাবে পরিচয় দেন। তরুণীর দাবি, ওই যুবকরা তাঁকে বলেছিলেন যে, ওই চিনা মোবাইল এখনও বাজারে আসেনি। বাজারে আসার আগে ওই সংস্থা একটি সমীক্ষা করবে। সেই সমীক্ষার জন্য আরও কর্মী দরকার।

তরুণী ওই সমীক্ষার কাজ করতে আগ্রহী হন। সেই অনুযায়ী বাঁশদ্রোণী থানা এলাকার ব্রহ্মপুরের আনন্দপার্কে একটি বাড়িতে পৌঁছতে বলা হয় তাঁকে। সেখানে আরও অনেক তরুণীই একই কাজ পেতে এসেছিলেন। অভিযোগ, সেখানে সকলের ছবি তোলেন ওই তিন যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই এলাকার বাসিন্দা এবং চাকরির জন্য আসা তরুণীরা ছবি তোলা হচ্ছে কেন তা নিয়ে প্রশ্ন করলে ওই যুবকরা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। এমনকি নিজেদের কোম্পানি সম্পর্কেও দিতে পারেননি কোনও তথ্য। সেখান থেকেই তাঁদের প্রতারণা করা হচ্ছে বলে মনে হয়। তার পরেই তাঁরা গোটা বিষয় জানান বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশকে।

Advertisement

আরও পড়ুন: চোরাই মালের তালিকা দিয়ে কিনে আনতে বলেছিল সিঁথি থানা! তদন্তে নতুন মোড়​

আরও পড়ুন: ঘৃণ্য অপরাধীও সব আইনি বিকল্প পাবে, নির্ভয়া কাণ্ডে বলল আদালত​

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তিন যুবককে আটক করা হলে, তাঁরা নিজেদের কোম্পানি সংক্রান্ত কোনও নথি দেখাতে পারেননি। কেন তাঁরা ছবি তুলছিলেন, দিতে পারেননি তারও সদুত্তর। চিনা সংস্থার হয়ে ব্যবসা করার জন্য যে সরকারি নথি থাকার দরকার তা-ও দেখাতে পারেননি ওই যুবকরা। পুলিশ জানিয়েছে, মণিপুরের দুই যুবকের বাড়ি ইম্ফলে। তৃতীয় জন অর্থাৎ শাহিদের বাড়ি মধ্যপ্রদেশে। জেরায় তাঁরা জানিয়েছেন একটি চিনা অ্যাপ তৈরির জন্য তাঁরা সমীক্ষা করছিলেন। গোটা কাজের বরাত নিয়েছিলেন জাফর নামে অন্য এক ব্যক্তি। পুলিশ জাফরকে পাকড়াও করার চেষ্টা করে। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকেই জাফরের মোবাইল সুইচড অফ পাওয়া যায়।

পুলিশের ধারণা, গোটাটাই কোনও নয়া প্রতারণা। তবে মূল পাণ্ডা জাফর পাকড়াও না হলে গোটা বিযয়টি এখনও পরিষ্কার নয় পুলিশের কাছে। প্রতারণার একাধিক অভিযোগে মঙ্গলবার তিন জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার তাঁদের আলিপুর আদালতে তোলা হলে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন