বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতেই ভরসা পেয়ে ঘটনার আট মাস পরে এ বার সরাসরি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন এক নির্মাণ ব্যবসায়ী। অভিযোগ উঠেছে বিধাননগর পুর নিগমের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান শাহনওয়াজ আলি মণ্ডলের (ডাম্পি) নামে। অভিযোগ, ১০ লক্ষ টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে ওই ব্যবসায়ীকে।
পুলিশ জানায়, অনুপ্রসাদ শর্মা নামে ওই ব্যবসায়ী বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন, ২০১১ সালে ডাম্পির ওয়ার্ডে বাবলাতলা এলাকায় একটি বাড়ি কেনেন তিনি। কিন্তু তখন সেখানে থাকতেন না। গত বছর নভেম্বরে স্থানীয় জগদীশ স্পোর্টিং ক্লাবের তরফ থেকে জনৈক রাজু পাল, শুভজিৎ ঘোষ (দুষ্টু), রতন মল্লিক ও ইমতিয়াজ আলি মণ্ডল (বুড়ো) নামে চার যুবক এসে তাঁকে স্থানীয় কাউন্সিলর ডাম্পির সঙ্গে দেখা করতে বলেন। ডাম্পির সঙ্গে কথা না বলে তিনি ওই বাড়িতে থাকতে পারবেন না বলেই ওই যুবকেরা তাঁকে ভয়ও দেখায়। ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তিনি ডাম্পির সঙ্গে দেখা করতে গেলে ডাম্পি তাঁর কাছে ১০ লক্ষ টাকা চান। পুলিশ সূত্রে খবর, অনুপ্রসাদবাবু জানিয়েছেন, তিনি ১ লক্ষ টাকা দিতে পারবেন বলায় ডাম্পির লোকজন তাঁকে মারধর করে এবং খুনের হুমকি দেয়। এমনকী, তোলা দিতে না পারায় ডাম্পির সভাপতিত্বে চলা ওই ক্লাব তাঁর সম্পত্তিতে তালা ঝুলিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ ওই ব্যবসায়ীর।
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহের সঙ্গে দেখা করেন ওই ব্যবসায়ী। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশেই তিনি ডাম্পি-সহ চার জনের বিরুদ্ধে কমিশনারেটে লিখিত অভিযোগ করেন। বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান সন্তোষ পাণ্ডের অবশ্য দাবি, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তবে অভিযোগ করার কথা স্বীকার করেছেন অনুপ্রসাদবাবু। যদিও তিনি বলেন, ‘‘যা বলার পুলিশকে বলেছি। খুব আতঙ্কে আছি। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলব না।’’
উল্লেখ্য, বাবলাতলার ওই ক্লাবের সম্পাদক বাবু শীলকে মঙ্গলবারই তোলাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার করে বিমানবন্দর থানা। ৫ লক্ষ টাকা চেয়ে একটি নির্মাণ সংস্থার কাজ বন্ধ করা ও নির্মাণস্থলের রক্ষীকে মারধরের অভিযোগ ছিল বাবুর বিরুদ্ধে। যদিও ওই ঘটনায় নির্মাণকারী সংস্থার তরফে ক্লাব-সভাপতি ডাম্পির নামে অভিযোগ হয়নি। ডাম্পির দলের বিরুদ্ধে তোলা চেয়ে হয়রানির অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মীও। ইদানিং অবশ্য ওই এলাকার একাধিক তোলাবাজির ঘটনাকে ঘিরে বিতর্কের মুখে পড়েছেন ডাম্পি। এ বার পুলিশের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের হল তাঁর নামে।
বিধাননগরের মেয়র তথা নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ডাম্পি সব অভিযোগ নস্যাৎ করে বলেন, ‘‘ওই ব্যবসায়ীকে চিনি না। কারও থেকে আমি ১০ লক্ষ টাকা চাইনি। অযথা বদনাম করা হচ্ছে। আমি এ নিয়ে খুব হতাশ।’’
ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি সব্যসাচীবাবুও। তিনি বলেন,‘‘এ বিষয়ে কিছু জানি না। পুলিশে অভিযোগ হলে আমার কী বলার আছে!’’