হাওড়া

হোর্ডিং সরাতে বাধা শাসক কাউন্সিলরেরই

বেআইনি হোর্ডিং সরানোর পুর-অভিযানে প্রথম দিনে বাধা এল নিজেদের দল থেকেই। বৃহস্পতিবার হাওড়া স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড থেকে হোর্ডিং সরাতে গেলে তৃণমূল-শাসিত পুরসভার কমিশনার ও কর্মীদের বাধা দেন এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর দলবলই। যদিও সেই বাধাদানের প্রতিবাদে কড়া অবস্থান নিয়েছেন তৃণমূল পুর-বোর্ডেরই মেয়র। বলেছেন, প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে না-পারলে ভাঙার কাজ চলবেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ০১:০৬
Share:

খোলা হচ্ছে হোর্ডিং। বৃহস্পতিবার, হাওড়ায়। — নিজস্ব চিত্র

বেআইনি হোর্ডিং সরানোর পুর-অভিযানে প্রথম দিনে বাধা এল নিজেদের দল থেকেই। বৃহস্পতিবার হাওড়া স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড থেকে হোর্ডিং সরাতে গেলে তৃণমূল-শাসিত পুরসভার কমিশনার ও কর্মীদের বাধা দেন এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর দলবলই। যদিও সেই বাধাদানের প্রতিবাদে কড়া অবস্থান নিয়েছেন তৃণমূল পুর-বোর্ডেরই মেয়র। বলেছেন, প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে না-পারলে ভাঙার কাজ চলবেই।

Advertisement

পূর্ব-ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ দিন সকাল থেকেই হাওড়া স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড চত্বর থেকে অবৈধ হোর্ডিং খুলে ফেলার তোড়জোড় শুরু করে দেয় হাওড়া পুরসভা। এলাকাটি পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। অভিযোগ, এ দিন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা হাওড়া ব্রিজের কাছে জিআর রোড সংলগ্ন একটি পার্কে লাগানো হোর্ডিং খুলতে গেলে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর লক্ষ্মী সহানি ও তাঁর দলবল তাঁদের ঘিরে ফেলে কাজ বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়।

বাধা দিতে আসা দলটির পাল্টা অভিযোগ— খোদ মেয়রের উদ্বোধন করা একটি পার্কের ভিতরে পুরসভার অনুমতি নিয়ে লাগানো হোর্ডিং জোর করে খুলে দেওয়া হচ্ছে, অথচ অন্য বেআইনি হোর্ডিংয়ে হাত দিচ্ছে না পুরসভা। তাই তাঁরা প্রতিবাদ করেছেন, বাধা দেননি। যদিও পুরসভার বক্তব্য, এই অভিযোগ ঠিক নয়। ধাপে ধাপে ওই এলাকার সমস্ত অবৈধ হোর্ডিংই খুলে ফেলা হবে।

Advertisement

এ দিন গণ্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুর-কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। অভিযোগ, সে সময়ে পুর-কমিশনারের সঙ্গেও বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন লক্ষ্মী সহানি ও তাঁর সঙ্গে থাকা দলবল।

পুর-কমিশনারের অভিযোগ, পুরসভাকে না জানিয়ে যে সব হোর্ডিং লাগানো হয়েছে, সেগুলিই খুলে ফেলা হচ্ছিল। কিন্তু কাউন্সিলর তাতে বাধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। নীলাঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘টাকাপয়সা খেয়ে এ সব হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। তাই বাধা আসছে। কিন্তু আমরা থামব না। সমস্ত বেআইনি হোর্ডিংই ভেঙে দেব। সেই কাজ শুরু হয়েছে।’’

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কাউন্সিলর প্রথমে পুর-কমিশনারের কথায় আমল দেননি। পরে নীলাঞ্জনবাবু শহরের বাইরে থাকা মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি নিজেই ওই কাউন্সিলরকে ফোন করে কাজে বাধা না দিতে নির্দেশ দেন। এর পরেই নিরস্ত হয় কাউন্সিলরের দলবল। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক পরে ফের হোর্ডিং ভাঙার কাজে ফেরেন পুরকর্মীরা।

কিন্তু কোনও দলের কাউন্সিলর কি এ ভাবে পুরসভার কাজে বাধা দিতে পারেন? হাওড়ার মেয়র বলেন, ‘‘যদি হোর্ডিংগুলি আইনানুগ ভাবে লাগানো না হয়ে থাকে, তা হলে উনি বাধা দিতে পারেন না। আমি ওঁকে বলেছি, ওই হোর্ডিংগুলো লাগানোর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে হবে। ততক্ষণ ভাঙার কাজ চলবে। নথি না দেখালে পুরসভার সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে।’’

অভিযুক্ত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর লক্ষ্মী সহানির অবশ্য বক্তব্য, ‘‘মেয়রেরই উদ্বোধন করা ওই পার্কটি করে দিয়েছিল যে বেসরকারি সংস্থা, তারা পুরসভার থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েই হোর্ডিংগুলি লাগিয়েছে। সেই কাগজপত্রও রয়েছে। কিন্তু পুর-কমিশনার বেআইনি হোর্ডিং না ভেঙে অনুমতিপ্রাপ্ত হোর্ডিংগুলি ভাঙছেন কেন, তা জানাতেই প্রতিবাদ করেছিলাম। কাজে বাধা দিইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন