ক্রেতাসুরক্ষা দফতরের সাহায্যে টাকা ফেরত পেলেন দম্পতি

আদালতের নির্দেশে নয়, কেবলমাত্র মধ্যস্থতা করে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর ৪০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিল এক দম্পতিকে। গত জুলাইয়ে এক ট্র্যাভেল এজেন্সি-কে অগ্রিম বাবদ ওই টাকা দিয়েছিলেন দম্পতি।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৭
Share:

আদালতের নির্দেশে নয়, কেবলমাত্র মধ্যস্থতা করে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর ৪০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিল এক দম্পতিকে। গত জুলাইয়ে এক ট্র্যাভেল এজেন্সি-কে অগ্রিম বাবদ ওই টাকা দিয়েছিলেন দম্পতি। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে যাত্রা বাতিল হওয়ায় টাকা ফেরতের আবেদন জানান ওই সংস্থায়। তাতে কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডেকে আবেদন জানান মধ্য কলকাতার রমানাথ মজুমদার স্ট্রিটের বাসিন্দা রত্না মণ্ডল। দিন কয়েক আগে টাকার চেক হাতে পেয়ে রত্নাদেবী বলেই ফেললেন, পথে-ঘাটে ক্রেতা সুরক্ষায় এত বিজ্ঞাপন দেখি। এও শুনেছি ধর্মতলায় এক নামী দোকানে ব্লাউজ বানাতে গিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন দর্জি। ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মধ্যস্থতায় ব্লাউজ-সহ শাড়ির দাম দিতে হয় দোকানকে। ও সব শুনেই মন্ত্রীর কাছে প্রতিকার চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম।’’ এ বার তাঁরও বিশ্বাস জন্মেছে দফতরের কাজকর্মে।

Advertisement

ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, রমানাথ মজুমদার স্ট্রিটের ওই দম্পতি পুজোর সময়ে জর্ডন-ইজরায়েল ঘুরতে যাবেন বলে যোগাযোগ করেছিলেন ওই ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে। কথা পাকা হয়ে যাওয়ার পরে জুলাই মাসের ২৮ তারিখে ৪০ হাজার টাকা অগ্রিমও দেন। টাকা দেওয়ার দু’এক দিনের মধ্যেই রত্নাদেবীর স্বামী অনিমেষ মণ্ডল অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। বেড়ানো মাথায় ওঠে পরিবারের। কী ভাবে চিকিৎসার টাকা জোগাড় করা যায়, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন তাঁরা। সে সব ভেবেই ভ্রমণের জন্য দেওয়া অগ্রিম ফেরতের জন্য ওই ট্র্যাভেল এজেন্সির কাছে চিঠি দিয়ে আবেদন জানান ওঁরা। দফতর সূত্রের খবর, অগস্টের ৪ তারিখ সেই চিঠি পাঠানো হয় ট্র্যাভেল এজেন্সির দফতরে। কিন্তু রত্নাদেবীর আবেদনে কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ।

এর মধ্যেই চিকিৎসা পর্বও শুরু হয়ে যায়। রত্নাদেবীর কথায়, ‘‘খবরের কাগজে ব্লাউজের সেই ঘটনা মনে পড়ে। সেই সঙ্গে পথ-ঘাটে, মেট্রোয় ক্রেতা সুরক্ষার বিজ্ঞাপন দেখে স্থির করি সেখানেই অভিযোগ জানাব।’’ অগস্টের ৩০ তারিখে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে লিখিত অভিযোগ জানান রত্নাদেবী। এর পরেই দফতরের সেন্ট্রাল কনজিউমার গ্রিভান্স রিড্রেসাল সেল ওই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।

Advertisement

ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের এক অফিসার জানান, কোনও অভিযোগ জমা পড়লে প্রথমেই তা আদালতে পাঠানো হয় না। মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিরোধ-নিস্পত্তির মীমাংসা করার চেষ্টা হয়। সেখানে দফতরের আধিকারিকের সামনে দু’পক্ষকেই ডাকা হয়। এই পদ্ধতিতে দ্রুত সমাধান করা যায়। সল্টলেকের এক বাসিন্দার সেই ব্লাউজ-সমস্যার সমাধান মধ্যস্থতার মাধ্যমেই হয়েছিল। এ বারও এই ট্র্যাভেল সংস্থাকে ডেকে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছিল। তাতেই টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান ভ্রমণ সংস্থাটি। ২৮ সেপ্টেম্বর রত্নাদেবীতে সংস্থার অফিসে ডেকে পাঠিয়ে ৪০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। সংস্থার এক কর্তা জানান, ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের চিঠি তাঁদের মুম্বই অফিসে পাঠানো হয়েছিল। সিদ্ধান্ত সেখানেই নেওয়া হয়েছে। টাকা পেয়ে রত্নাদেবী পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর তাঁর অভিযোগও তুলে নিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন