বাবার চিকিৎসায় কত ব্যয়, হিসেব চাইল আদালত

যাদবপুরের বাসিন্দা খগেন্দ্রনাথ পাত্র তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে বাড়ি থেকে উৎখাতের অভিযোগ জানিয়ে মামলা করেছেন। সেই মামলার শুনানিতে শুক্রবার ওই মন্তব্য করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

রোজগেরে ছেলে বৃদ্ধ বাবার চিকিৎসা নিয়ে সচেতন হয়ে থাকলে বিবেচকের কাজই করেছেন। কিন্তু ছেলে প্রতি মাসে বাবার চিকিৎসার জন্য কত টাকা খরচ করেন, তার হিসেব চায় কলকাতা হাইকোর্ট। টাকা খরচ না করে থাকলে প্রতি মাসে ছেলের রোজগারের এক তৃতীয়াংশ বাবার চিকিৎসার জন্য যাতে কাজে লাগাতে পারেন, তার ব্যবস্থা করবে আদালত।

Advertisement

যাদবপুরের বাসিন্দা খগেন্দ্রনাথ পাত্র তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে বাড়ি থেকে উৎখাতের অভিযোগ জানিয়ে মামলা করেছেন। সেই মামলার শুনানিতে শুক্রবার ওই মন্তব্য করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক। গত ৬ ডিসেম্বর ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বসাক মন্তব্য করেছিলেন, বাড়ি তৈরি করেছেন বাবা। সেই বাড়ির কোন তলায়, কোন ঘরে বাবা থাকবেন, তা তিনি নিজে ঠিক করবেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব যাদবপুরের সেন্ট্রাল পার্কের বাসিন্দা, সত্তর বছরের খগেন্দ্রনাথ পাত্র রাজ্য পর্যটন দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। স্ত্রী বছর কয়েক আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তাঁর দুই মেয়ে, এক ছেলে। সেন্ট্রাল পার্কে খগেনবাবুর দোতলা বাড়ি। স্ত্রী মারা যাওয়ার আগেই ছোট মেয়ে ও জামাইকে একতলায় থাকতে দিয়ে গিয়েছিলেন।

Advertisement

দোতলার একটি ঘরে খগেনবাবু ও তাঁর স্ত্রী থাকতেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পরে ওই ঘরেই থাকতেন বৃদ্ধ। ওই তলার অন্য ঘরে থাকেন তাঁর ছেলে, বৌমা ও চার বছরের নাতনি। বৃদ্ধের ছেলেও রাজ্য পর্যটন দফতরে কাজ করেন। বৌমা স্কুলশিক্ষিকা। খগেনবাবুর অভিযোগ, তাঁর ছেলে ও বৌমা তাঁকে গত এপ্রিল মাসে বাড়ি থেকে মারধর করে বার করে দেন।

গত ৬ ডিসেম্বরের শুনানিতে বিচারপতি যাদবপুর থানার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, বৃদ্ধকে বাড়ি ফেরাতে হবে এবং তিনি বাড়ির যে তলায়, যে ঘরে থাকতে চান, তার ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ সেই নির্দেশ মেনে ঘরে ফেরায় বৃদ্ধকে।

এ দিন সেই মামলার পরবর্তী শুনানি ছিল। খগেনবাবুর ছেলের আইনজীবী আদালতে জানান, খগেনবাবুর হৃদ্‌যন্ত্রে গোলমাল রয়েছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে।
ছেলে চিকিৎসার খরচ দেন। তিনি বাড়ির দোতলায় সিঁড়ি বেয়ে উঠতে পারবেন না। তাই একতলাতেই থাকবেন।

বৃদ্ধের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী ও সুদেষ্ণা বসুঠাকুর জানান, তাঁর মক্কেল বাড়ির দোতলার একটি ঘরে সস্ত্রীক থাকতেন। তিনি সেই ঘরেই থাকতে চান।

তা শুনে ওই মন্তব্য করেন বিচারপতি বসাক। বিচারপতি ছেলের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী সোমবার ছেলের বেতনের পরিমাণ এবং খগেনবাবুর চিকিৎসার জন্য কত টাকা ছেলে খরচ করেন, তা জেনে এসে আদালতকে জানাতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন