অবৈধ টোটো, ভ্যানো নিয়ন্ত্রণে কমিটি গড়ল কোর্ট

বেআইনি টোটো-ভ্যানোকে বৈধতা দিলে, চুরি-ডাকাতিকেও বৈধতা দিতে হবে বলে মনে করে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার একটি মামলার প্রেক্ষিতে শুক্রবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের পর্যবেক্ষণ, ‘‘জীবিকার চেয়ে জীবনের মূল্য আদালতের কাছে অনেক বেশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০১:৫১
Share:

বেআইনি টোটো-ভ্যানোকে বৈধতা দিলে, চুরি-ডাকাতিকেও বৈধতা দিতে হবে বলে মনে করে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার একটি মামলার প্রেক্ষিতে শুক্রবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের পর্যবেক্ষণ, ‘‘জীবিকার চেয়ে জীবনের মূল্য আদালতের কাছে অনেক বেশি।’’ বেআইনি টোটো-ভ্যানোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে এ দিন অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে (স্বরাষ্ট্র) উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গড়ে

Advertisement

দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ও তাঁর ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কমিটি আগামী ১০ জুন ডিভিশন বেঞ্চকে জানাবে, বেআইনি টোটো-ভ্যানোর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং হবে।

বেআইনি অটো-ভ্যানো চলাচল বন্ধ করতে রাজ্য পরিবহণ দফতর ব্যর্থ হওয়ায় বৃহস্পতিবারই ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। বিচারপতি দত্ত
সরকারি কৌঁসুলির উদ্দেশে বলেন, ‘‘বারো বছর আগেই বেআইনি অটো-ভ্যানো চলাচল বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রশাসন সেই
নির্দেশ মানেনি।’’

Advertisement

জনস্বার্থে দায়ের হওয়া একটি মামলায় হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্রের ডিভিশন বছর কয়েক আগে নির্দেশ দিয়েছিল বেআইনি টোটো এবং ভ্যানো চলাচল বন্ধ করতে। সেই নির্দেশ কার্যকর না হওয়ায় আদালত অবমাননার একটি মামলা দায়ের হয়।

প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন রাজ্যের পরিবহণ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি আলাপণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিল। আলাপনবাবু আদালতে জানান, টোটো অনেক গরিব মানুষের রুজি-রুটি হয়ে উঠেছে। কেবল তাই নয়, প্রত্যন্ত এলাকায় গণ পরিবহণে টোটো সাহায্যও করছে বলে আলাপণবাবু জানান। তিনি আরও বলেন, এ সংক্রান্ত সমস্যা দেশ জুড়েই। সেই সমস্যা মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকার কয়েক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিয়ে একটি কমিটি গড়েছে। সেই কমিটিকে সাহায্য করবেন কয়েক জন অফিসার। তাঁদের মধ্যে তিনিও রয়েছেন। সেই কমিটি আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে টোটো বা ওই ধরনের যান চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

তা শুনে প্রধান বিচারপতি আলাপনবাবুর উদ্দেশে বলেন, ‘‘সেটি সরকারের নীতির প্রশ্ন। সেই সময় আপনারা নিন। তত দিন কি বেআইনি টোটো-ভ্যানো চলবে? দুর্ঘটনা ঘটলে কি হবে? দুর্ঘটনা বন্ধ করতে পারবেন? বেআইনি টোটো-ভ্যানো চলাচলে রাশ টানতে না পারলে বলুন, আদালত তা করবে।’’

এ দিন রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্ত ডিভিশন বেঞ্চকে জানান, টোটো-ভ্যানোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে আদালত একটি কমিটি গড়ে দিক।

সেই মতো অতিরিক্ত মুখ্যসচিবকে (স্বরাষ্ট্র) চেয়ারম্যান করে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। সেই কমিটিতে পরিবহণ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, কলকাতা, ব্যারাকপুর, হাওড়া ও বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারেরাও রয়েছেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই কমিটি বৈঠক করে বেআইনি টোটো-ভ্যানো চলাচল কী ভাবে বন্ধ করা যায়, তা ঠিক করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন