আমরি মামলার সাক্ষী প্রায় পাঁচশো জন। অভিযুক্ত ১৬ জন। তাঁদের এক জন চার্জশিট থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছেন। তার ফয়সালা না হলে চার্জ গঠন করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিচার প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে বৃহস্পতিবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। একই সঙ্গে তিনি রাজ্যকে পরামর্শ দিয়েছেন, বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে নির্দিষ্ট একটি রূপরেখা তৈরি করার জন্য।
২০১১-এ ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে আগুন লেগে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত প্রবীণ চিকিৎসক মণি ছেত্রী। তদন্তকারীদের দাবি, ওই চিকিৎসক কেবল আমরি-র অন্যতম ডিরেক্টর নন, হাসপাতাল চালানোর লাইসেন্সও তাঁর নামে। মণি ছেত্রীর নাম চার্জশিটে আছে। কিন্তু নিজের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে মামলা করেছেন তিনি। গত সপ্তাহে সেই মামলার প্রথম শুনানিতে তাঁর আইনজীবী সমরাদিত্য পাল আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত, প্রতি দিনের কাজে যুক্ত নন।
তাই আগুনের ঘটনায় তাঁকে অভিযুক্ত করা যায় না।
এ দিন ওই মামলার দ্বিতীয় শুনানি ছিল। বিচারপতি বাগচী হাইকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, নিম্ন আদালতের বিচারপর্বের কী হল। পিপি জানান, চার্জ গঠন করা বাকি। অভিযুক্তেরা নানা আবেদন করেছেন নিম্ন আদালতে। তার ফলে বিচারে দেরি হচ্ছে। নিম্ন আদালতে ৩০মে মামলাটি ফের আদালতে উঠবে। পিপি জানান, হাইকোর্টের এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিম্ন আদালতে চার্জ গঠন করা যাচ্ছে না। তা শুনে বিচারপতি বাগচী পাবলিক প্রসিকিউটরের উদ্দেশে মন্তব্য করেন, ‘‘বিচার নিয়ে কেবল ক্ষতিগ্রস্তদের পরিজনেরাই উদ্বিগ্ন নন, অভিযুক্তেরাও চিন্তিত। ফলাফলের উপরে তাঁদের মান-সম্মান জড়িত। বিচারের দ্রুত নিষ্পত্তি তাঁরাও চান। সেই জন্য বলছি, রূপরেখা তৈরি করুন।’’