বাড়িতে বাবার সঙ্গে সনৎকুমার মৈত্র। সোমবার। ছবি: অরুণ লোধ
সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত যুবক সনৎকুমার মৈত্রের বাড়ির ঠিকানায় আধার কার্ড ডাকযোগে পাঠানো হচ্ছে বলে সোমবার আদালতে জানাল কেন্দ্র। বড়িশার বাসিন্দা, ২৭ বছরের ওই যুবক দেড় বছর ধরে ঘুরেও আধার কার্ড না পাওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের আদালতে মামলা করেছিলেন সনৎকুমারের মা নূপুর মৈত্র। গত সপ্তাহে ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বসাক কেন্দ্রের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কবে ও কখন ওই যুবকের বাড়িতে গিয়ে আধার কার্ডের জন্য ছবি তোলা ও হাতের ছাপ নেওয়া হবে এবং কবেই বা তিনি সেই কার্ড হাতে পাবেন, তা সোমবার আদালতে জানাতে।
এ দিন মামলার শুনানির গোড়াতেই বিচারপতি বসাক কেন্দ্রের আইনজীবী জয়দীপ সেনের কাছে জানতে চান, সনতের আধার কার্ড পাওয়ার কী ব্যবস্থা হয়েছে? আইনজীবী জানান, ১১ নভেম্বর ওই যুবকের বাড়িতে গিয়ে ছবি ও হাতের ছাপ-সহ প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে এসেছেন কর্মীরা। এ দিনই তাঁর বাড়ির ঠিকানায় ওই কার্ড ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তা শুনে বিচারপতি বসাক কেন্দ্রের আইনজীবীর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘সনৎ না হয় আধার কার্ড পেয়ে গেলেন। তাঁর মতো অসুস্থ ব্যক্তিরা বা অন্য প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, এমন লোকেরা কী ভাবে ওই কার্ড পাবেন?’’
কেন্দ্রের আইনজীবী জানান, আধার কার্ডের ওয়েবসাইট খুলে এই ধরনের ব্যক্তিরা যদি আবেদন করেন, তা হলে চার দিনের মধ্যে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করার ব্যবস্থা রয়েছে। ওই ওয়েবসাইট খুলে ‘গ্রিভান্স’ (অভিযোগ) লেখা জায়গায় আবেদন জানাতে হবে। যদিও এই মামলার আবেদনকারী ওই ওয়েবসাইট খুলে তাঁর আবেদন জানাননি। তা শুনে বিচারপতি বসাক জানতে চান, সাধারণ মানুষের পক্ষে এই সব জানা সম্ভব কি না। নূপুরদেবীর আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও আদালতে জানান, প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ জানেনই না এমন ওয়েবসাইটের কথা।
কেন্দ্রের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ওয়েবসাইট কী ভাবে খুলতে হবে, তা নিজের চোখে দেখতে চান তিনি। কেন্দ্রের আইনজীবী মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ করে ওই ওয়েবসাইট খুলে বিচারপতি বসাককে তা দেখান। তা দেখানো হয় নূপুরদেবীর আইনজীবীদেরও। তাঁরা সন্তুষ্ট হয়েছেন জেনে মামলার নিষ্পত্তি করে দেন বিচারপতি বসাক।