হাসপাতালে আহত দেবেন্দ্রনাথ দাস। নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার পাশেই নিজের গুমটি মেরামত করছিলেন। হঠাৎই বিকট আওয়াজ। বোমার আঘাতে সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে প়ড়ে কাতরাতে থাকেন দেবেন্দ্রনাথ দাস। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে দেখেন, দেবেন্দ্রনাথবাবুর ডান হাত ছিন্নভিন্ন। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকুড়গাছির রামকৃষ্ণ সমাধি রোডে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিরাটির বাসিন্দা দেবেন্দ্রনাথ দাসের গুমটিটি বহু পুরনো। এ দিন দুপুরে ওই গুমটি নিজেই মেরামত করছিলেন দেবেন্দ্রবাবু। বালির নীচে রাখা ছিল বহু পুরনো একটি বোমা। পা পড়তেই দুপুর ২-৫৫ মিনিট নাগাদ বোমাটি ফেটে যায়। যে জায়গায় বোমাটি রাখা ছিল তার পাশেই ছোট্ট নিকাশি নালা। নালার পাশেই কেআইটি আবাসন।
দিনেদুপুরে বোমা ফাটায় আতঙ্কে রয়েছেন কেআইটি বিল্ডিংয়ের আবাসিকরা। এখানেই আবাসনের সাতটি ব্লক রয়েছে। আবাসনের বাসিন্দা খোকন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘৪৭ বছর এখানে রয়েছি। এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম। প্রচন্ড আতঙ্কে রয়েছি।’’ তিনি জানান, বাড়িতে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎই বিকট আওয়াজ শুনতে পাই। ছুটে এসে দেখি, দেবেন্দ্রদা মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী উত্তম কর বলেন, ‘‘৫০ বছর এখানে ব্যবসা করছি। এই ধরনের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। খুব আতঙ্ক বোধ করছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘দেবেন্দ্রকে বহু বছর ধরে চিনি। ও সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখত।’’ স্থানীয় সূত্রে খবর, আগে দেবেন্দ্রনাথবাবু কাঁকুড়গাছি এলাকায় থাকতেন। সম্প্রতি বিরাটিতে বাড়ি করেছেন। বিরাটি থেকে রোজ সকালে কাঁকুড়গাছি এসে রাতে বাড়ি ফিরতেন। তাঁর দুই ভাইয়ের দোকানও কাছাকাছি।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, রক্তের ছোপ ছোপ দাগ। দু’টি চপ্পল প়ড়ে রয়েছে। কেআইটি আবাসনের পাঁচিলে বোমা ফাটার ছাপ। বোমার আঘাতে গুমটির টিন নীচের দিকে থেকে তুবড়ে গিয়েছে। বোমার আঘাতে আহত দেবেন্দ্রনাথবাবু এখন এনআরএসে চিকিৎসাধীন। তাঁর ভাই সোনা দে রাতে বলেন, ‘‘অপারেশন করে চিকিৎসকরা দাদার ডান হাতের কব্জির উপরের অংশটা বাদ দিয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডান হাতের আরও কিছু অংশ বাদ দিতে হবে।’’