আরও তিন ট্রামডিপোর উদ্বৃত্ত জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া দ্রুত চালু করার নির্দেশ দিল পরিবহণ দফতর। এ ব্যাপারে বিভাগীয় পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন রাজ্যের পরিবহণসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক মাস আগে ট্রামের অপর তিনটি ডিপোর জমি সিইএসসি-কে দীর্ঘমেয়াদি লিজ দেওয়া হয়। শীঘ্র তাদের হাতে নির্দিষ্ট জমি তুলে দিতে চান ট্রাম কতৃর্পক্ষ।
ইতিমধ্যে তিন ডিপোর জমি হস্তান্তর বাবদ সিইএসসি-র কাছ থেকে ২৬ কোটি টাকা পেয়েছে রাজ্য সরকার। এই টাকায় ইচ্ছুক ১৪৭ আবেদনকারীকে স্বেচ্ছাবসরের দুই কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই তৃতীয় ও চূড়ান্ত কিস্তির টাকা দেওয়া হবে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর।
টালিগঞ্জ, শ্যামবাজার, বেলঘরিয়া, কালীঘাট, গ্যালিফ স্ট্রিট ও খিদিরপুর— এই ৬টি ট্রামডিপোর ‘উদ্বৃত্ত’ ৩৭৪ কাঠা জমি হস্তান্তরের জন্য ২০১৩-র অক্টোবর মাসে চূড়ান্ত ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। সে বছর ১৮ নভেম্বর এ ব্যাপারে দরপত্র দাখিল করে পরিবহণ দফতর। কিন্তু নানা কারণে আবেদনকারী ক্রেতা বাছাইয়ে সমস্যায় পড়ে পরিবহণ দফতর। নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি হয় গত বছরের মে মাসে। গ্যালিফ স্ট্রিটের পুরো অংশ এবং শ্যামবাজার ও কালীঘাট ডিপোর অংশ লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সিটিসি-র এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘হস্তান্তরের জন্য শ্যামবাজার ও কালীঘাটে আমাদের কিছু অফিসঘর ভাঙার প্রয়োজন ছিল। এই কাজ হয়ে গিয়েছে।’’
ঠিক হয়েছে, আগের তিন ডিপোর মতো আর লিজে নয়। টালিগঞ্জ, বেলগাছিয়া ও খিদিরপুর— এই তিন ডিপোর উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করা হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমি টালিগঞ্জে। সেখানকার ২৫০ কাঠা জমি বিক্রির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই সেই ডিপো ও সংলগ্ন ট্রামলাইনের পথ সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। বেলগাছিয়া ও খিদিরপুরের যথাক্রমে ৫২ ও ১৬ কাঠা জমি বিক্রি করা হবে। সিটিসি-র অধিকর্তা নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য বলেন, ‘‘মাস ছয়েকের মধ্যে কাজ হয়ে যাবে।’’
তিন ট্রামডিপোর জমি বিক্রি করে কত পাওয়া যাবে? প্রশাসনের তরফে সে নিয়ে কেউ মন্তব্য করতে চাননি। তবে সিটিসি-র সিটু-সমর্থিত কর্মী-সমিতির সম্পাদক সুবীর বসু বলেন, ‘‘জমির এলাকাগত সরকারি দামের হিসেবে এই তিন ডিপোর জমি বিক্রি করে সরকারের ৫০০ কোটি টাকা পাওয়া উচিত।’’ তাঁর অভিযোগ, প্রথম পর্যায়ে তিন ডিপোর জমি বিক্রি না করে লিজ দেওয়ায় সিটিসি বেশ কয়েক কোটি টাকা বাড়তি আদায়ের সুযোগ হারিয়েছে। ওই তিন ডিপোর জমি বিক্রি করলে রাজস্ব বাবদও সরকার মোটা টাকা আয় করতে পারত। পরিবহণ দফতরের এক অফিসার বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে সিটিসি-র পরিচালনমণ্ডলীর সদস্যেরা একমত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’