মাত্রাছাড়া টাকা ‘হাঁকছে’ সাইবার কাফে

অভিযোগ, অনলাইনে সেই আবেদন করার জন্য একটি সাইবার কাফে মানোয়ারার কাছে ৫০০ টাকা চেয়েছিল। ২৫০ টাকার বিনিময়ে অন্য একটি কাফে থেকে তিনি অনলাইনে আবেদন করেন। আমিরুল এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান ব্যুরো অব ইমিগ্রেশন (বিওআই)-এর কাছে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০২:১৩
Share:

বাংলাদেশের সাতক্ষীরা থেকে কলকাতায় বেড়াতে এসেছিলেন মানোয়ারা খাতুন। সঙ্গে পাসপোর্ট ও তিন মাসের ভিসা। কলকাতায় থাকাকালীন ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যায়। ধাপা এলাকার বাসিন্দা বোনপো আমিরুল ইসলামকে নিয়ে তাই গিয়েছিলেন ভিসার মেয়াদ বাড়াতে।

Advertisement

অভিযোগ, অনলাইনে সেই আবেদন করার জন্য একটি সাইবার কাফে মানোয়ারার কাছে ৫০০ টাকা চেয়েছিল। ২৫০ টাকার বিনিময়ে অন্য একটি কাফে থেকে তিনি অনলাইনে আবেদন করেন। আমিরুল এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান ব্যুরো অব ইমিগ্রেশন (বিওআই)-এর কাছে। বিওআই-এর তরফে শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ জানিয়ে বলা হয়, বিদেশ থেকে, বিশেষত বাংলাদেশ থেকে আসা কম্পিউটারে সড়গড় নন এমন দুঃস্থদের ঠকিয়ে টাকা রোজগার করছেন কলকাতার কিছু সাইবার কাফের মালিক। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে বিওআই।

এজেসি বসু রোডে এই বিওআই-এর অফিসেই ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার বসেন। ভারতে আসা বিদেশিদের ভিসার মেয়াদ সেখান থেকে বাড়ানো হয়। সম্প্রতি কেন্দ্র পুরো প্রক্রিয়া অনলাইনে করছে। ফলে, ইদানীং যে বিদেশিই ভিসার মেয়াদ বাড়াতে বা অন্য কোনও সমস্যা নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁকে অনলাইনে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকা থেকে আসা বিদেশিদের অনেকেই সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল বার করে অনলাইনে আবেদন করে দিচ্ছেন। অনেকে হোটেলে ফিরে সেখান থেকে আবেদন করছেন।

Advertisement

কিন্তু যাঁরা মোবাইল বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারে তত সড়গড় নন, তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন। আমিরুল ফোনে বলেন, ‘‘সে দিন ইমিগ্রেশন অফিস থেকে বেরিয়ে দেখি, কম্পিউটারে সাজানো একটি দোকানের গায়ে বাংলায় লেখা, বাংলাদেশ ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য অনলাইনে সেখান থেকে আবেদন করা যায়। তাই দেখে মাসিকে নিয়ে ভিতরে যাই। ভিসার মেয়াদ বাড়াতে এমনিতে ১৯৫০ টাকা ফি দেওয়ার কথা। তা ছাড়া ওরা আরও ৫০০ টাকা চায় আমার কাছ থেকে। এ নিয়ে তর্কও হয়।’’ সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্য এক নাগরিক সিকান্দার আলি পাইকের কাছ থেকেও এ ভাবে প্রচুর টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে।

বিওআই-এর এক অফিসারের অভিযোগ, যে দিন থেকে অনলাইনে আবেদনের নির্দেশ এসেছে, তার পর থেকেই অফিসের আশপাশে কিছু সাইবার কাফে বিদেশিদের থেকে অত্যধিক টাকা নেওয়া শুরু করেছে। অফিসারের কথায়, ‘‘সাইবার কাফেতে গিয়ে অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ করতে খুব বেশি ২০ টাকা লাগার কথা। ১০০ টাকা নিলেও কথা ছিল। তা বলে ৫০০ টাকা! কোথাও এক হাজার টাকাও চাওয়া হচ্ছে!’’ অফিসারের কথায়, ‘‘এতে তো দেশের বদনাম হচ্ছে।’’ এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন