Cyclone Amphan

ঝড়ের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত করোনার পরীক্ষাও

কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা সূত্রের খবর, মঙ্গলবার নতুন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৯৩০টি। বুধবার ঘূর্ণিঝড়ের দিন নতুন নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মাত্র ২৬৪টি!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ০২:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিধ্বংসী আমপানের জেরে বকেয়া রয়েছে বহু নমুনার পরীক্ষা। সেটাই এখন মাথাব্যথার কারণ সরকারি-বেসরকারি ল্যাবগুলির। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কিছু ল্যাব জানিয়েছে, আজ, শনিবার‌ও তাদের পক্ষে নতুন নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। বুধবার থেকে সে ভাবে নমুনা পরীক্ষা না-হ‌ওয়ায় প্রচুর সংখ্যক রিপোর্ট পাঠানো বাকি। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত।

Advertisement

করোনা নির্ণয়ে নমুনা পরীক্ষার কাজ ঝড়ের দাপটে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত, নাইসেডের পরিসংখ্যান থেকেই তা স্পষ্ট। কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা সূত্রের খবর, মঙ্গলবার নতুন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৯৩০টি। বুধবার ঘূর্ণিঝড়ের দিন নতুন নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মাত্র ২৬৪টি! উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আপাতত নতুন নমুনা না পাঠাতে অনুরোধ করেছেন নাইসেড কর্তৃপক্ষ। এস‌এসকেএম সূত্রের খবর, প্রতিদিন যে পরিমাণ নমুনা সেখানে পরীক্ষা হয়, এখন তার মাত্র ৪০ শতাংশ হচ্ছে। প্রতিদিন এস‌এসকেএমের ল্যাবে অন্তত ৩৫০ নমুনার পরীক্ষা হত।

আমপান-পরবর্তী পর্বে রাজ্যের ৩০টি ল্যাবেই নমুনা পরীক্ষার কাজ ব্যাহত হয়েছে। নিউ টাউনের একটি বেসরকারি ল্যাবের আধিকারিক জানান, ঝড়ে ল্যাবের পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হ‌ওয়ায় রবিবার দুপুর পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করা হবে না। শহরের কিছু ল্যাবের কর্মীরা রাস্তায় গাছ ও জমা জলের কারণে কাজে যোগ দিতে পারেননি। বস্তুত, বেসরকারি ল্যাবগুলিকে সচল করতে আসরে নামে স্বাস্থ্য কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন জানান, দুপুরের পর থেকে বেসরকারি ল্যাবগুলিতে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। যে সব এলাকায় ল্যাবকর্মীরা কাজে যেতে পারছিলেন না, সেখানে পুলিশ সাহায্য করেছে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর নিযুক্ত এক পদস্থ কর্তা জানান, সরকারি স্তরে পরীক্ষার কাজ কোথাও বন্ধ হয়নি। দুর্যোগের মধ্যেও জেনারেটর রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে কর্মীরাও থেকে গিয়েছেন। তাই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩৫৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ওই স্বাস্থ্যকর্তা জানান, ৩১ মে-র মধ্যে দেড় লক্ষ নমুনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছিল স্বাস্থ্য ভবন। জেলাগুলি যে নমুনা সংগ্রহ করেছিল, দুর্যোগে তা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

আমপানে যোগাযোগ ব্যবস্থা যে ভাবে বিপর্যস্ত, সেটাই উদ্বেগের বলে মত বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের। পিয়ারলেস হাসপাতালের সিইও সুদীপ্ত মৈত্র জানান, নেট-বিপর্যয়ের কারণে ল্যাবগুলি থেকে রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে। নমুনা পরীক্ষা ধাক্কা খাওয়ায় রোগীদের কী চিকিৎসা হবে, তা নিয়ে ধন্দে পড়তে হচ্ছে। নন-কোভিড রোগীদের নিয়েও সমস্যা কম নয়। সুদীপ্তবাবুর কথায়, “নেট‌ওয়ার্কের সমস্যায় অনেক সময়ে চিকিৎসকদের ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে চিকিৎসকের পরামর্শও নেওয়া যাচ্ছে না। কোভিড রোগীরা কেমন আছেন, তা কোয়রান্টিনে থাকা আত্মীয়স্বজনেরা জানতে পারছেন না।”

রুবি হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার শুভাশিস দত্তের কথায়, “এখন চিকিৎসা পরিষেবা অনেক বেশি মোবাইল ও ইন্টারনেট-নির্ভর। চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলে পরিষেবা দেব কী ভাবে? লকডাউনে টেলি মেডিসিনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সে-ও শিকেয় উঠেছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement