ঝড়ের আশঙ্কায় সাময়িক বন্ধ থাকার পর ফের চালু হল ফেরি পরিষেবা। ছবি পিটিআই।
ফণীর আশঙ্কা কাটতেই শনিবার সকাল থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হল ট্রেন, বাস ও ফেরি চলাচল। দুর্যোগের কথা ভেবে মেট্রোর সংখ্যা কমানো হলেও এ দিন সকালে নির্ধারিত সময়েই শুরু হয় পরিষেবা। তবে মেঘলা আকাশ, টিপটিপ বৃষ্টি আর আবহাওয়া নিয়ে দোলাচলের মধ্যে দুপুর পর্যন্ত খুব বেশি মানুষকে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি।
ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় শুক্রবার বিকেল তিনটে থেকে শিয়ালদহ দক্ষিণ ও হাসনাবাদ শাখায় সমস্ত লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। পরপর ট্রেন বাতিলের জেরে রাতের দিকে শিয়ালদহ স্টেশন ছিল প্রায় সুনসান। ফণী আছড়ে পড়লে শনিবার সকালের দিকে পরিষেবা কী ভাবে স্বাভাবিক রাখা যাবে, তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় ছিলেন রেলকর্তারা। রাত একটা নাগাদ শিয়ালদহ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে ঝড়ের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা আছে জানিয়ে রেলের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীদের সতর্কও করা হয়। রাতভর কন্ট্রোল রুমে প্রায় জেগেই কাটান রেলের আধিকারিকেরা।
তবে ভোরের দিকে ঝড়ের গতিপথ বদল সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই শিয়ালদহ দক্ষিণ এবং হাসনাবাদ শাখায় পরিষেবা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঝড়ের দাপটে নামখানায় ওভারহেড তার ছিঁড়ে পড়ে। কাকদ্বীপে প্ল্যাটফর্মের ছাউনি উড়ে এসে পড়ে রেললাইনে। তবে সকাল ছ’টার মধ্যেই তা সরিয়ে ফেলে পরিষেবা স্বাভাবিক করা হয়। হাওড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিভিন্ন শাখাতেও শুরু হয় লোকাল ট্রেন চলাচল। রানাঘাট, বনগাঁ ও ব্যারাকপুর শাখাতেও ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
আশঙ্কা থাকলেও মেট্রো পরিষেবা অবশ্য সে ভাবে বিঘ্নিত হয়নি। রেলের মতো মেট্রোর আধিকারিকেরাও কন্ট্রোল রুমে সারা রাত জেগে কাটান। এ দিন অবশ্য সকালে নির্ধারিত সময়েই কবি সুভাষ ও দমদম থেকে মেট্রো চলাচল শুরু হয়। তবে ট্রেনের সংখ্যা ২২৪ থেকে কমিয়ে ১৭৪ করে দেওয়ায় যাত্রীদের অনেককেই প্ল্যাটফর্মে বাড়তি কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। সকালের দিকে সে ভাবে মেট্রোয় যাত্রী না থাকলেও বেলার দিকে তাঁদের সংখ্যা বাড়ে।
হাওড়া এবং এসপ্লানেড বাসস্ট্যান্ডে এ দিন সকালে সরকারি বাসের দেখা মিললেও বেসরকারি বাস প্রায় ছিল না বললেই চলে। দুপুরের পর থেকে বেসরকারি বাস রাস্তায় নামা শুরু করে। রাজ্য পরিবহণ নিগম অবশ্য এ দিন সকাল থেকেই বাস চালিয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত বিশেষ বাস চালিয়ে দিঘায় আটকে পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার কাজ করেছিল। তার পরে ঝড়ের আশঙ্কায় বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়। শনিবার অবশ্য সকাল থেকেই ফের বাস পরিষেবা শুরু হয়। কলকাতা
থেকে দিঘার দিকে বাস চালানোর পাশাপাশি দিঘা থেকেও কলকাতার দিকে বাস চালানো শুরু হয়। কলকাতা থেকে অন্যান্য রুটেও বাস চলেছে। তবে সরকারি বাসের সংখ্যা কিছুটা কম ছিল।
শুক্রবার দিনভর ফেরি এবং ট্রাম বন্ধ ছিল। শনিবার দুপুর ১২টার পর থেকে হাওড়া-সহ গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে আস্তে আস্তে ফেরি চলাচল শুরু হয়। তবে সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল। সকাল ১০টার পর থেকে কলকাতার বিভিন্ন রুটে ট্রাম চলাচল শুরু হয়।