আইনের বিরোধী মিছিলে স্তব্ধ পথ, ভোগান্তি

পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার সবচেয়ে বড় মিছিলটির নেতৃত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন আইনের বিরোধিতায় রেড রোডে অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশ থেকে দুপুর ১টা নাগাদ শুরু হয় মিছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৪৭
Share:

স্তব্ধ: পাশ দিয়ে যাচ্ছে মিছিল। জটে আটকে যানবাহন। সোমবার, মেয়ো রোডে। নিজস্ব চিত্র

নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় একাধিক মিছিল এবং পথ অবরোধ। তার জেরে যানজটের কবলে পড়ল শহরের বিভিন্ন অংশ। দুর্ভোগে পড়লেন রাস্তায় বেরোনো মানুষজন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার সবচেয়ে বড় মিছিলটির নেতৃত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন আইনের বিরোধিতায় রেড রোডে অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশ থেকে দুপুর ১টা নাগাদ শুরু হয় মিছিল। রেড রোড, মেয়ো রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, ধর্মতলা, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ হয়ে মিছিল শেষ হয় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির গেটে। সেখানে নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় একটি সভা হয়। আর এই মিছিলের ধাক্কায় বেলা ১২টার পর থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায় রেড রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ-সহ মধ্য এবং দক্ষিণ কলকাতার একাধিক রাস্তায়। ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রিট এবং গভর্নর প্লেস (ইস্ট)-এ বাধা পায় গাড়ির গতি। যান চলাচল ব্যাহত হয় মেয়ো রোড, ডাফরিন রোড এবং এস এন ব্যানার্জি রোডেও।

ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে, মিছিল শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণ আগে থেকেই ফোর্ট উইলিয়ামের পূর্ব দিকের গেট থেকে সব গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় খিদিরপুর রোড এবং স্ট্র্যান্ড রোড দিয়ে। পার্ক স্ট্রিট থেকে মেয়ো রোডের দিকের রাস্তা মিছিলের জন্য বন্ধ থাকায় ধর্মতলা, বি বা দী বাগ এবং হাওড়ামুখী গাড়িকে ঘোরানো হয় কুইন্স ওয়ে এবং হসপিটাল রোড দিয়ে। মিছিল যে পথে গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে তার উল্টো দিকের রাস্তাতেও যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। অভিযোগ, এর জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ। চরম দুর্ভোগে পড়েন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা। পায়ে প্লাস্টার করা অবস্থায়, হুইলচেয়ারে চাপিয়ে মেডিক্যাল কলেজে ভাইকে ডাক্তার দেখাতে এনেছিলেন দাদা। কিন্তু ফেরার পথে কোনও গাড়ি না পেয়ে হুইলচেয়ারে ভাইকে বসিয়েই বাড়ির পথে রওনা দেন তিনি।

Advertisement

এ দিন তৃণমূলের মিছিলের ফলে ধর্মতলার মোড় অবরুদ্ধ হয়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ। আটকে পড়ে এস এন ব্যানার্জি রোড, জওহরলাল নেহরু রোড। এর প্রভাব পড়ে আশুতোষ মুখার্জি রোডেও। হাওড়া এবং শিয়ালদহের দিক থেকে মহাত্মা গাঁধী রোডে গাড়ি চলতে না পারায় ওই অঞ্চলের দু’দিকেই গাড়ির লম্বা সারি চোখে পড়েছে। কিছু গাড়িকে ঘুরপথে পাঠানো হলেও তাতে আমজনতার ভোগান্তি কিছুমাত্র কমেনি। গিরিশ পার্ক মোড় থেকে ধর্মতলার দিকে রাস্তা বন্ধ থাকায় দুপুরে সব গাড়িকে বিবেকানন্দ রোড দিয়ে পাঠানো হয়েছে। যদিও লালবাজারের দাবি, সমাবেশ শেষ হওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যায়।

শাসক দলের মিছিল ছাড়াও এ দিন নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় এবং জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে পথে নামে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি। দু’বার অবরোধ করা হয় কলেজ স্ট্রিটে। অবরোধ-মিছিল হয় যাদবপুরেও। লালবাজার জানিয়েছে, বামপন্থী বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মিছিলের জেরে এ দিন গাড়ির গতি বাধা পায় রাজা এস সি মল্লিক রোডে। অন্য দিকে, নতুন আইনের পক্ষে বিজেপির একটি মিছিল গড়িয়ার দিক থেকে যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ সুলেখা মোড়ে তাদের আটকায়। সেখানেই রাস্তায় বসে অবস্থান শুরু করেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। এর ফলে ওই রাস্তায় বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি চলাচল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন