অবরুদ্ধ সরণি। —নিজস্ব চিত্র।
হাওড়া ময়দান থেকে বন্ধুদের সঙ্গে নিউমার্কেট এসেছিল তাতাই। বাসে চেপে স্ট্র্যান্ড রোড ধরে ফেরার পথে ধর্মতলা থেকে হাওড়া ময়দান পৌঁছতে এক ঘণ্টারও বেশি লেগে গেল। রাস্তা ফাঁকা থাকলে এই দূরত্ব ১৫ মিনিটে পেরনোর কথা।
ছবিটি প্রতি দিনের। স্ট্র্যান্ড রোড তাই অসংখ্য নিত্যযাত্রীর কাছে কার্যত আতঙ্কের পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাস, ট্যাক্সি, ঠেলা গাড়ি, ব্যক্তিগত গাড়ি, মালবাহী গাড়ির চাপে এক ফুট চাকা গড়াতেই দীর্ঘ সময় লাগে। সারা দিনই প্রায় একই অবস্থা থাকে বলে জানালেন নিত্যযাত্রীরা।
এই রাস্তায় নির্দিষ্ট কোনও বাসস্টপ নেই। যেখান খুশি বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রীরা ওঠা-নামা করেন। পিছনে অন্য গাড়ির লাইন পড়ে যায়। তখন পাশের এন সি দত্ত সরণি, ক্যানিং স্ট্রিট মোড় ও বড়বাজারের মোড় থেকে আসা গাড়ি এগোতে পারে না। রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। জট ছাড়তে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। কখনও সেই জট ছাড়াতে পথে নামতে হয় বাস কন্ডাক্টরদের। অনেক সময়ে আবার ‘ওভারটেক’ করতে গিয়েও যানজট লেগে যায়।
এই অবস্থার জন্য অভিযোগের আঙুল উঠেছে পুলিশ ও বাসচালকের দিকে। অভিযোগ, যাত্রী তোলার জন্য অহেতুক রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি করেন বাসচালকরা। বাসের গতি ঠিকঠাক থাকলে এই অবস্থা হয় না বলে ধারণা নিত্যযাত্রীদের।
অন্য দিকে, ব্রাবোর্ন রোডের ব্রিজের নীচের রাস্তা পার হওয়ার পরেই ঠেলা গাড়ির দাপট বাড়ে। হাওড়া সেতুতে ওঠার মুখেও যানজট। রাস্তার বেশির ভাগ অংশই ঠেলা গাড়ির দখলে। সেতুর ফুটপাথ দোকানদারের দখলে থাকায় পথচারীরা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হন। সার দিয়ে ঠেলা গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে সেতুতেও যানজট।
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, পুলিশ ঠিকমতো যান নিয়ন্ত্রণ না করায় এই রাস্তার যানজট ব্যাপক আকার নেয়। কলকাতা থেকে হাওড়া বা দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার ক্ষেত্রে স্ট্র্যান্ড রোড এক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। ধর্মতলা থেকে রামরাজাতলা, হাওড়া ময়দান, শিবপুর যেতে হলে এই রাস্তাই ভরসা। কলকাতার যে কোনও জায়গা থেকে হাওড়া স্টেশনে আসার এটিই প্রধান রাস্তা। নিত্যযাত্রীদের প্রশ্ন এমন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কেন বাড়তি গুরুত্ব নিচ্ছে না?
কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিক ভি সলোমন নিশাকুমার বলেন, “ওই এলাকায় যানজটের চাপ থাকে। কিন্তু এখন চাপ বেড়েছে বলে আমার কাছে খবর নেই। তবে ওখানে এমনিতেই বাড়তি পুলিশ থাকে।” ঠিকমতো যান নিয়ন্ত্রণ হয় বলেও দাবি তাঁর।