সল্টলেকে বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার

একাই থাকতেন তিনি। তিন দিন ধরে তাঁকে কেউ ঘরের বাইরে যাতায়াত করতে দেখেননি। তাঁর এক আত্মীয় বারবার ফোন করেও যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। উদ্বিগ্ন হয়ে শেষে প্রতিবেশীদের ফোন করে জানান সেই আত্মীয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৫৭
Share:

একাই থাকতেন তিনি। তিন দিন ধরে তাঁকে কেউ ঘরের বাইরে যাতায়াত করতে দেখেননি। তাঁর এক আত্মীয় বারবার ফোন করেও যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। উদ্বিগ্ন হয়ে শেষে প্রতিবেশীদের ফোন করে জানান সেই আত্মীয়। প্রতিবেশীরা তাঁর ঘরের দরজায় ধাক্কা দিলেও ভিতর থেকে সাড়া মেলেনি। বাসিন্দারাই পুলিশকে খবর দেন। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পুলিশ দেখে, একটি চেয়ারে স্থির হয়ে বসে ৭৮ বছরের সেই বৃদ্ধ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

সোমবার সল্টলেকের পূর্বাচল আবাসনের ঘটনা। মৃতের নাম রজত রায়চৌধুরী (৭৮)। পুলিশ জানায়, ময়না-তদন্তের পরেই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে। তবে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের।

পুলিশ জানায়, পূর্বাচল আবাসনের ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন রজতবাবু। সল্টলেকে প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা বেশি। অধিকাংশের ক্ষেত্রে তাঁদের সন্তানেরা কর্মসূত্রে থাকেন দেশের বাইরে বা ভিন্‌ রাজ্যে। বাড়িতে একাই থাকেন সেই সব দম্পতি। আত্মীয় পরিজনের চেয়েও পরিচারক-পরিচারিকাদের উপরে নির্ভরশীল তাঁরা। সল্টলেকে কেউ কারওর খোঁজ রাখে না, এমন তকমা দীর্ঘ দিনের। ব্লক এলাকায় এই সমস্যা বেশি। তুলনায় আবাসন এলাকায় কম। প্রবীণ নাগরিকদের অবস্থা কতটা অসহায়, পূর্বাচল আবাসনে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু তা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

Advertisement

ব্লক-আবাসন কমিটি কিংবা স্থানীয় প্রশাসন বছরভর কিছু নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রবীণ নাগরিকদের একাকীত্বের সমস্যা মেটাতে নানা প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু তাতেও যে আখেরে কাজ দেয় না, তার উদাহরণও রয়েছে যথেষ্ট।

সল্টলেকে বাসিন্দাদের একটি সংগঠনের কর্মকর্তা কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘হৃদয় বিদারক ঘটনা। বাসিন্দাদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়লেও পর্যাপ্ত নয়। বিশেষত প্রবীণ নাগরিকদের খোঁজখবর রাখার বিষয়ে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন।’’

বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে ভাবেই হোক প্রবীণদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কোন পথে সে কাজ হতে পারে, জানি না। তবে এলাকায় নিজেদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে পারলে সমস্যার কিছুটা সুরাহা হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন