মৃত্যু বাড়লেও নেই সচেতনতা সোয়াইন ফ্লু নিয়ে

সরকারি স্তরে এখনও পর্যন্ত ন্যূনতম প্রচারও শুরু হয়নি। উপসর্গ নিয়ে মানুষও বিভ্রান্ত। অথচ এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে সোয়াইন ফ্লু-তে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে চলতি বছরে সোয়াইন ফ্লু-র প্রকোপ ২০১৫-র মতো মারাত্মক চেহারা নিতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ১২:১৯
Share:

সরকারি স্তরে এখনও পর্যন্ত ন্যূনতম প্রচারও শুরু হয়নি। উপসর্গ নিয়ে মানুষও বিভ্রান্ত। অথচ এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে সোয়াইন ফ্লু-তে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে চলতি বছরে সোয়াইন ফ্লু-র প্রকোপ ২০১৫-র মতো মারাত্মক চেহারা নিতে পারে।

Advertisement

শুক্রবার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৫৬ বছরের এক প্রৌঢ় মারা যান। দিন কয়েক আগে আরেকটি হাসপাতালে সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে নদিয়ার চার বছরের এক শিশু ও এক মহিলার মৃত্যু হয়। আরও মাস কয়েক আগে মেটিয়াবুরুজের এক বাসিন্দারও মৃত্যু হয়েছিল সোয়াইন ফ্লু-তে। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলির কর্তারা জানান, তাঁরা সমস্ত মৃত্যুর রিপোর্টই যথাসময়ে স্বাস্থ্য ভবনকে জানিয়েছিলেন। যদিও স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী এই মরশুমে একজনেরও মৃত্যুর খবর স্বীকার করেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে তিন জনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছে। তদন্ত করে দেখা গিয়েছে এই তাঁদের মধ্যে একজন ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। বাকি দু’জনের ডেথ সার্টিফিকেট এখনও দেখিনি। তাই কিছু বলতে পারব না। তবে সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, এমন খবর আমাদের কাছে নেই।’’

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সচেতনতা ও পরিকাঠামোর অভাবের জেরে সোয়াইন ফ্লু-এর সংক্রমণ আরও ছড়াচ্ছে। জ্বর, গলায় ব্যথা, মাথার যন্ত্রণা ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীরা উপসর্গগুলিকে অবহেলা করছেন। ফলে চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হচ্ছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘এই রোগ সংক্রামক। তাই আক্রান্তকে আলাদা রাখা দরকার। হাঁচি-কাশি, নিঃশ্বাস থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। রোগ নির্ণয় না হলে, সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।’’ চিকিৎসক প্রবীর বিশ্বাস জানান, শিশু, বয়স্ক, ডায়বিটিক ও অন্তঃসত্ত্বাদের সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। তাঁদের আরও বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।

Advertisement

ডাক্তারেরা জানান, আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরে অন্যান্য ফ্লু-এর মতো সোয়াইন ফ্লু-এর সংক্রমণ বাড়ে। কখনও প্রখর রোদে গা পুড়ে যাচ্ছে, আবার তার পরেই এসি চালিয়ে প্রাণ জুড়াচ্ছে। কিন্তু তাপমাত্রার এই বৈপরীত্যের জেরে সংক্রমণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। সাধারণ জ্বর ভেবে অনেকেই বিষয়টিকে অবহেলা করছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষা করার মতো এ শহরে পর্যাপ্ত পরিকাঠামোও নেই। সরকারি ভাবে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং নাইসেড-এ পরীক্ষা হয়। এ ছাড়া শহরের তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে এই পরিকাঠামো রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন