রেড রোডের পর এ বার বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট। হেলমেটহীন অবস্থায় কাজ করতে করতে শনিবার দুপুরে ফের উঁচু থেকে পড়ে মৃত্যু হল শ্রমিকের। পুলিশ জানায়, চার তলা একটি বাড়িতে আরও চার-পাঁচ জন মিস্ত্রির সঙ্গে ভারা বাঁধছিলেন বছর চল্লিশের ওই যুবক। হঠাৎই পা পিছলে ফুটপাথে পড়ে যান তিনি। মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। রাত পর্যন্ত ওই শ্রমিকের পরিচয় জানা যায়নি।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ওই শ্রমিক এবং তাঁর সঙ্গে যাঁরা কাজ করছিলেন, তাদের কারও হেলমেট এবং সেফটি বেল্ট ছিল না। শ্রমিকদের দিয়ে যে ব্যক্তি কাজ করাচ্ছিলেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, এ দিনের ঘটনা ফের দেখিয়ে দিল, শহরের বহুতলে কাজ করার সময়ে উপযুক্ত নিরাপত্তা ছাড়াই কী ভাবে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন নির্মাণকর্মীরা।
২৮ মে রাজ্যের নতুন সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পরের দিন, রেড রোডের মঞ্চ খোলার সময়েও একই ভাবে ৪০ ফুট উচ্চতা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল এক শ্রমিকের। তার পরেও মাথায় হেলমেট, সেফ্টি বেল্ট ছাড়াই কাজ করতে দেখা যায় বহু শ্রমিককে।
অনেক ক্ষেত্রেই মালিক বা ঠিকাদারেরা পাল্টা যুক্তি দেন, কাজ শেষ করার যা তাড়া থাকে, তাতে বহু শ্রমিকই তাড়াহুড়োয় সে সব পরতে চান না। আবার ছোটখাটো সংস্থার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সরঞ্জাম কেনাই বাহুল্য হয়ে দাঁড়ায়।
মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে মোটরবাইকে উঠলে হেলমেট পরতেই হবে। সেই নির্দেশ পালন করতে উঠে পড়ে লেগেছিল পুলিশ প্রশাসনও। শুরু হয়েছিল ধরপাকড়। কিন্তু এত কিছুরও পরেও হেলমেট না পরাটা যে অভ্যাসে পরিণত হয়েছে তা বোঝা গেল শনিবার সকালে হাওড়ার ড্রেনেজ ক্যানেল রোডে ফের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায়। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন এক বন্ধুর মোটরবাইকে চেপে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে যাচ্ছিলেন চন্দন ঠাকুর নামে এক যুবক। বিহারের বাসিন্দা ওই যুবক বর্তমানে বাবা-মায়ের সঙ্গে শিবপুরের একটি বাড়িতে
ভাড়া থাকেন। পুলিশ জানায়, গোপাল যাদব নামে যে বন্ধুর মোটরবাইকে চেপে তিনি যাচ্ছিলেন তাঁর মাথায় হেলমেট থাকলেও চন্দনের মাথায় ছিল না। বৃষ্টিতে ভেজা রাস্তায় মোটরবাইকের চাকা পিছলে তা উল্টে যায়। চালকের হাল্কা চোট লাগলেও পিছনের সিটে বসা চন্দন মাথায় মারাত্মক চোট পান। চন্দনকে প্রথমে হাওড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।