মুখঢাকা: বৃহস্পতিবার সম্মেলনে তাইল্যান্ডের প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র
গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মেলন। তাতে যোগ দেওয়ার কথা এশিয়ার একাধিক দেশের। তিন দিনের সেই সম্মেলনের প্রথম দিনেই দেখা গেল, করোনাভাইরাসের আতঙ্কে মুখোশ পরে বসে তাইল্যান্ডের প্রতিনিধিরা। বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে পরাগবাহক পতঙ্গ এবং পরাগ মিলন নিয়ে শুরু হওয়া ওই সম্মেলনে একই কারণে আসেননি কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরাও।
ব্যাঙ্ককের চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্র এবং এক শিক্ষককে সম্মেলনে যোগ দিতে দেখা গেল মুখোশ পরে। এ দিন শিক্ষক নাটপট ওয়ারিট জানালেন, করোনাভাইরাসের আতঙ্কে এই সতর্কতা। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘আমাদের দেশে ভারতের তুলনায় বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তাই আমাদের দেখে যাতে কেউ ভয় না পান, মুখোশ তার জন্যেও লাগিয়েছি।’’ উদ্যোক্তাদের তরফে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক পার্থিব বসু জানান, চিন থেকে পাঁচ জনের আসার কথা থাকলেও এসেছেন এক জন। তিনি মাইকেল অর। চাইনিজ় অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস থেকে আসা মাইকেল আমেরিকার নাগরিক। চিনে গবেষণা করছেন। সে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর আগেই গিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা। আর চিনে ফেরেননি। জানালেন, সম্মেলন শেষে সিঙ্গাপুর বা বেজিং যাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ বেজিংয়ে করোনার দাপট তুলনায় কম। সম্মেলনে আসেননি জাপান, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়ার প্রতিনিধিরা।
ফুল থেকে ফুলে পরাগ নিয়ে গিয়ে মিলন ঘটায় কিছু পতঙ্গ। অনেক ফসলের উৎপাদন এই পদ্ধতির উপরে নির্ভর করেই হয়। ফসলের চাষ বাড়ায় ঝোপঝাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। তাতে ওই পতঙ্গদের বাসস্থান কমছে। যার প্রভাব পড়ছে সেই ফসলের
উৎপাদনে। পার্থিববাবু জানান, সারা বিশ্বে ওই পতঙ্গ কমছে। এ নিয়ে এশিয়া জুড়ে গবেষণার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলাই সম্মেলনের লক্ষ্য। যাতে সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে ২০৩০ সালের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায়। মাইকেল বলেন, ‘‘এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে দাঁড়াচ্ছে। এ জন্য গবেষকদের এক হয়ে কাজ করা জরুরি।’’ বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহম্মদ রুহুল আমিন। তিনি জানালেন, শস্যের মধ্যে ৭০ শতাংশ উৎপন্ন হয় পরাগ
মিলনের মাধ্যমে। ফসলের উৎপাদন বাড়লেও এই সব শস্য কমছে। যেমন, ধান চাষ বাড়ছে। কিন্তু সর্ষে, বেগুনের মতো ফসলের ফলন কমছে। তিনি বলেন, ‘‘কীটনাশকের ব্যবহারেও কীটপতঙ্গ মারা যাচ্ছে। এ সব নিয়ে যৌথ গবেষণায় এমন সম্মেলন জরুরি।’’