দাবি ছিল প্রাক্তনীদের জন্য একটি ঘর। আর তা ঘিরেই হাতাহাতিতে জড়ালেন দাঁতের ডাক্তার ও ডাক্তারি পড়ুয়াদের দু’টি গোষ্ঠী। তাও আবার স্বাস্থ্য দফতরের দুই কর্তার উপস্থিতিতে। শনিবার দুপুরে, আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালে।
ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার গিরি। তাঁকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
কলেজের একটি সূত্রের খবর, আপাতদৃষ্টিতে একটি ঘরের দাবি নিয়ে গোলমাল হলেও হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ শাসক দল থেকে বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়াই সমস্যার মূল কারণ। তৃণমূল প্রভাবিত ডাক্তার ও পড়ুয়াদের এক প্রকার দূর্গ হিসেবে পরিচিত এই কলেজ। তাই বিজেপি প্রভাবিত প্রাক্তনী সংগঠন তৈরির উদ্যোগ শুরু হওয়ায় এ দিনের গোলমাল। তৃণমূল প্রভাবিত ছাত্র সংগঠনের দাবি, স্বাস্থ্য দফতরের দুই কর্তা এর মূল উদ্যোক্তা।
ডেন্টাল কলেজের তৃণমূল প্রভাবিত ছাত্র সংসদের অভিযোগ, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি সেক্রেটারি (ডেন্টাল) বিমলেন্দু সাহা ও এডিএইচএস (ডেন্টাল) প্রদ্যোৎ বিশ্বাস কয়েক জন বহিরাগতকে নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার গিরির ঘরে হাজির হন। তাঁদের দাবি, প্রাক্তনী সংগঠনের নামে কলেজের একটি ঘর দিতে হবে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ‘আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ’ শাখার সভাপতি অভিষেক সাঁতরার দাবি, স্বাস্থ্য দফতরের কয়েক জন কর্তা সদলবলে এসে বিজেপি সমর্থিত সরকারি দাঁতের ডাক্তারদের সংগঠন তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তাঁরাই ঘর চাওয়ার নামে গোলমাল শুরু করেন। অধ্যক্ষকে ভয় দেখান, ধাক্কাধাক্কি করেন। তাতে অধ্যক্ষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে এনআরএসে ভর্তি করতে হয়।’’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজিবুল হাসান বলেন, ‘‘ক্ষমতার লোভে স্বাস্থ্য ভবনের কিছু কর্তা এবং ডেন্টাল কলেজের কিছু ডাক্তার বিজেপিতে নাম লেখাতে চাইছেন। এমনকী সঙ্গে না থাকলে চাকরির ক্ষতি করার হুমকিও
দিচ্ছেন তাঁরা।’’
অভিযোগ উড়িয়ে প্রদ্যোৎবাবু বলেন, ‘‘মিথ্যা কথা। আমরা ওই হাসপাতালের প্রাক্তনী। আমাদের সভা, বৈঠকের জন্য একটা ঘর ছিল। কয়েক বছর ধরে সেটি তালাবন্ধ। চাবি পাওয়া যাচ্ছে না। ওই ঘরটি খোলার বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম।’’ তাঁর দাবি, কথা বলতে বলতেই অধ্যক্ষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারণ, আগে থেকেই ওঁর হার্টের গুরুতর সমস্যা ছিল। ওই কর্তার কথায়, ‘‘বিজেপি বা তৃণমূল, কারও সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ বিমলেন্দু সাহার দাবি, ‘‘কোনও গোলমাল হয়নি। সব ঠিক আছে।’’