কলকাতার সবচেয়ে বড় জলাশয়। সেই ইস্টবঙ্গল ক্লাব তৈরি হয়েছিল যে বছর, সে বছরই এই জলাশয়কে সাজিয়ে গুছিয়ে ক্ষণিক হাওয়া বদলের শহুরে ঠাঁই হিসেবে গড়ে তুলেছিল ব্রিটিশ সরকারের কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট। ১৯২০ সালের সেই ঢাকুরিয়া লেক নাম বদলে পরে হল রবীন্দ্র সরোবর। দিন যত গিয়েছে, তত রবীন্দ্র সরোবরকে সাজিয়ে তোলার ধুমও বেড়েছে। ভালবাসার অত্যাচারে সেই জলাশয়ের আজ হাঁসফাঁস দশা। বিশাল জলাশয়ের জীববৈচিত্র ধ্বংস হওয়ার মুখে।
জলাশয়ের পাড় কংক্রিট দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়া চূড়ান্ত অবৈজ্ঞানিক। কিন্তু রবীন্দ্র সরোবরে সেই কাণ্ডই হয়েছে। লেক চত্বরে রাস্তা বাঁধিয়ে দেওয়া, বাহারি আলোয় সাজানো, সার সার গাছের গুঁড়ি রাঙিয়ে দেওয়া— এই অবধি সব ঠিকই ছিল। কিন্তু সরোবরের পাড় বরাবর জলের গভীর পর্যন্ত যে ভাবে কংক্রিটে মুড়ে দেওয়া হয়েছে সৌন্দর্যায়নের নামে, তাতে এই বিশাল জলাশয়ের জীববৈচিত্র সঙ্কটে। পরিবেশবিদরা বলছেন, জলাশয়ের জল পাড়ে যেখানে মাটির সঙ্গে মেলে, সেই জায়গা জীববৈচিত্রের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। জলে বেঁচে থাকে যে সব প্রাণী আর জলাশয়কে কেন্দ্র করে বাঁচে যারা, জলাশয়ের পাড় সেই দু’ধরনের প্রাণীর পক্ষেই গুরুত্বপূর্ণ। জলে অক্সিজেনের সরবরাহ ধরে রাখে জলাশয়ের পাড়। জলজ প্রাণীদের খাবারের সংস্থান করে জলাশয়ের পাড়। রবীন্দ্র সরোবরের পুরো পাড়ই এখন কংক্রিটের মোড়কে বন্দি। ফলে লেকে এখন বিপন্ন জলজ প্রাণ। সঙ্কটে খাদ্যশৃঙ্খলও। পরিবেশপ্রেমীদের হইচইতেও পুরসভার ঘুম অবশ্য ভাঙার নাম নেই। নীচে চোখ রাখুন ভিডিওতে।