—প্রতীকী চিত্র।
মহালয়া পেরোতেই যেন হাজির হয়েছিল শরৎ। ঝলমলে রোদ এবং নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘে পুরোদস্তুর উৎসবের মেজাজ। কিন্তু আবহবিদেরা বলছেন, আজ, পঞ্চমী থেকেই তাল কেটে যেতে পারে শরতের। দক্ষিণ ও উত্তর, দুই বাংলাতেই বৃষ্টির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, উপগ্রহ চিত্র মারফত বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত দানা বাঁধতেও দেখেছেন তাঁরা। সেই ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে বোধন সন্ধ্যা পেরোতে না-পেরোতেই বৃষ্টির দাপট বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
আলিপুর হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশে একটি নিম্নচাপ রয়েছে। সেখান থেকে দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। তার জেরে গাঙ্গেয় বঙ্গের পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঢুকছে। সেই জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘ তৈরি করবে এবং তা থেকেই বৃষ্টি হতে পারে। এক আবহবিজ্ঞানী বলছেন, ‘‘ষষ্ঠীর দিন থেকেই মহানগরীতে বৃষ্টির আশঙ্কা থাকছে। আকাশও কিছুটা মেঘলা থাকতে পারে।’’
পঞ্জিকার তিথি মেনে শারদোৎসব শুরু হলেও হাওয়া অফিসের ক্যালেন্ডারে এখনও বর্ষা ফুরোয়নি। নির্ঘণ্ট মেনে চললে ৮ অক্টোবর তার দক্ষিণবঙ্গ থেকে পাততাড়ি গুটোনোর কথা। ফলে বর্ষার শেষ লগ্নেই এ বার উৎসব শুরু হয়েছে। সাধারণত, এ সময় বর্ষা দুর্বলই থাকে। তাই শরতের আবহাওয়া মিলছিল। কিন্তু আবহবিজ্ঞানীরা জানান, এ সময়ে নিম্নচাপ অক্ষরেখা বা ঘূর্ণাবর্তের দৌলতে আচমকা বর্ষা সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। তার জেরে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে পুজোর দিনগুলোতে।
উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদদের কেউ কেউ বলছেন, বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্তটি ওড়িশায় ঢুকে পড়তে পারে। সেখানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে সে ক্ষেত্রে পুরো বৃষ্টির ধাক্কাটা হয়তো উৎসবের উপরে পড়বে না। কিন্তু প্রতিবেশী রাজ্যে সে থাকলেও তার প্রভাব এ রাজ্যের আবহাওয়ায় পড়বে। সেই প্রভাবেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি মিলতে পারে। তবে এ সবের মধ্যেও হাল ছাড়তে নারাজ অনেকেই। আবহবিজ্ঞানীদেরই কেউ কেউ বলছেন, ‘‘পুজোয় দু’-এক পশলা বৃষ্টি বহু বছরই হয়। ও সব খুচরো বাধা উৎসবকে মাটি করতে পারবে না। ২০১৩ সালে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝ়ড় পিলিনের দাপটেও তো প্রবল বৃষ্টি হয়েছিল। তাতে কি উৎসব পুরো মাটি হয়েছিল।’’ আবহবিদদের একাংশের মতে, দিনের বেলা হয়তো দু’-এক পশলা বৃষ্টি হতে পারে। তার প্রভাব সন্ধের ভিড়ে তেমন পড়বে না।