প্রতীকী ছবি।
সল্টলেকের একটি ক্লিনিকে এক রোগীর মৃত্যু হয় গত ২০ মে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে মস্তিষ্কে ক্ষতের উল্লেখ করা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট হাতে পেয়ে পুলিশ ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করে। এ বার সেই মামলায় ওই চিকিত্সক তথা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রূপকুমার ব্রহ্মকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
সোমবার রাতেই ওই চিকিত্সককে গ্রেফতার করে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। তাঁকে মঙ্গলবার বিধাননগর এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বছরের এপ্রিল মাসে তিন তারিখে সল্টলেকের এক বেসরকারি মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন রণদীপ বসু। আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগোনার হরিনাভির বাসিন্দা রণদীপ পেশায় অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়র। বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে গেলে রণদীপকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। দ্রুত চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। যদিও তা করা হয়নি। এর পর গত ২০ মে রণদীপের বাড়িতে ফোন করে জানানো হয়, রণদীপবাবু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
কিন্তু, সেই দাবি মানতে চায়নি রণদীপের পরিবার। তাদের অভিযোগ ছিল, ওই মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রের বেশ কিছু কার্যকলাপ সন্দেহজনক ছিল। মাঝে কয়েকবার রণদীপের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ তাঁর পরিবারের। এমনকী, ২০ মে রণদীপকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল বলেও জানায় তার পরিবারের।
আরও পড়ুন: রোগীদের ফেরানোই যেন নিয়ম
পুলিশ জানায়, ডেথ সার্টিফিকেটে বলা হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অথচ ময়না তদন্তের রিপোর্টে অন্য তথ্য উঠে এসেছে। ওই রিপোর্টে জানা যায়, মাথা, পেটে আঘাত ছিল। এমনকী, তাঁর ঠোঁট ও হাতের নখ নীল হয়ে গিয়েছিল বলেও রিপোর্টে উল্লেখ ছিল। আঘাত ছিল দেহের বেশ কিছু জায়গায়। এর পরই বিধাননগর পূর্ব থানায় ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে রণদীপের পরিবার।
আজ বিধাননগর আদালতে অভিযুক্তকে তোলা হলে তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও এই নির্দেশের প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি, ‘‘ব্রহ্মের মতো খ্যতনামা চিকিৎসকে আগে তলব না করে এ ভাবে গ্রেফতার করতে পারে না পুলিশ।’’