Kolkata news

মদ, গাঁজা পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়লেন আলিপুর জেলের ডাক্তার!

সংশোধনাগারের বাইরে ওই চিকিত্‌সক ট্যাক্সি থেকে নামছিলেন। সেই সময় বাছাই করা কারারক্ষীদের নিয়ে জেলের ঠিক বাইরে গাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন কারাবিভাগের ডিআইজি বিপ্লব দাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৮ ১৩:৩৩
Share:

জেলে মদ-মাদক পাচার করতে গিয়ে গ্রেফতার পেশায় চিকিত্সক অমিতাভ চৌধুরী।—নিজস্ব চিত্র।

জেলবন্দিদের কাছ থেকে মাঝে মাঝেই পাওয়া যাচ্ছিল মাদক, মোবাইল ফোন। তা নিয়ে চিন্তার শেষ ছিল না জেল কর্তৃপক্ষের। এ বার সেই ঘটনায় গ্রেফতার করা হল জেলেরই এক চিকিৎসককে। ধৃতের নাম অমিতাভ চৌধুরী। তিনি আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক হিসাবে কাজ করতেন।

Advertisement

সংশোধনাগারে ঢোকার সময় তাঁকে দু’কেজি গাঁজা, চার লিটার মদ, ৩৫টি মোবাইল ফোন এবং প্রায় দেড় লক্ষ টাকা-সহ পাকড়াও করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চিকিত্‌সকের বাড়ি নাকতলায়। তিনি সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্মী।

জেলের অনিয়মের ঘটনায় আগেই নাম জড়িয়েছিল বেশ কয়েকজন নিচু তলার কর্মীর। অভিযোগ, তাঁরা নাকি টাকার বিনিময়ে বন্দিদের হাতে তুলে দিচ্ছিলেন মাদক, মোবাইলের মতো সামগ্রী। মাস কয়েক আগে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের অভ্যন্তরীণ তদন্তে জানা যায়, জেলের উচ্চ পদমর্যাদার একদল কর্মীও এই ঘটনায় যুক্ত। তদন্তে উঠে আসে অমিতাভ চৌধুরীর নাম।

Advertisement

আরও পড়ুন: লালবাজারের কাছেই গুন্ডা দিয়ে মার পুলিশকর্মীকে, অভিযুক্ত স্ত্রী

এর পরেই নড়েচড়ে বসেন জেল কর্তৃপক্ষ। হঠাত্‌ই যে তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারা দফতরের কর্তারা, তা ঘুণাক্ষরেও কেউ টের পাননি। শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ সংশোধনাগারের বাইরে ওই চিকিত্‌সক ট্যাক্সি থেকে নামছিলেন। সেই সময় বাছাই করা কারারক্ষীদের নিয়ে জেলের ঠিক বাইরে গাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন কারাবিভাগের ডিআইজি বিপ্লব দাস। আর জেল গেটের ঠিক ভেতরে দুই ডেপুটি জেলরকে নিয়ে ছিলেন জেলসুপার শুভেন্দুকৃষ্ণ ঘোষ।

জেল গেট পেরনোর সময় তল্লাশির জন্য ডাকতেই নাকি চমকে উঠেছিলেন পেশায় চিকিত্সক অমিতাভ চৌধুরী। ফাঁদে পড়ে গিয়েছেন বুঝে তিনি পালনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু গেট টপকাতেই ডিআইজি বিপ্লব দাসের হাতে তিনি ধরা পড়ে যান। তাঁর ব্যাগ খুলতেই পাওয়া যায় মাদক, মোবাইল, মদ এবং নগদ ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা।

জেলের ভেতরেই টানা জেরার মুখে পড়ে তিনি জানিয়েছেন বেশ কয়েক জেল বন্দির নাম, যাদের জন্য তিনি মাদক, টাকা ও মোবাইল নিয়ে এসেছিলেন। এই চক্রে বেশ কয়েকজন কারা আধিকারিকও যুক্ত বলে জানা গিয়েছে। মূলত তাঁদের সাহায্যেই জেলের মধ্যে বসে জনা কয়েক কুখ্যাত গ্যাংস্টার মাদক ও মোবাইলের ব্যবসা ফেঁদে বসেছে বলে তদন্তকারীদের ধারণা। জেরার মুখে অভিযুক্ত চিকিত্‌সক জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর পেনশন বাবদ মাসে তিনি পেতেন প্রায় ৫০ হাজার টাকা, জেল থেকে মিলত ৯০ হাজার টাকা। এর সঙ্গে জেলে মদ-মাদক পাচার করে পকেটে আসত মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন: গুলি ছিটকে যাওয়ার পিছনে ‘গাফিলতি’

শুক্রবার রাতেই অভিযুক্ত চিকিত্‌সক অমিতাভ চৌধুরীকে এনডিপিএস আইনে গ্রেফতরার করা হয়েছে। শনিবার তাঁকে আলিপুর আদালতে তোলা হবে। জেলে মাদক ও মোবাইল পাচারের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন