রোগী না-দেখে ডাক্তারেরা কেন অনুষ্ঠানে, বিতর্ক

চুঁচুড়ার বাসিন্দা রঞ্জন নন্দী কলকাতা স্টেশনের ফুড স্টলে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করেন। এ দিন তিনি জানান, তাঁর চোয়ালের বাঁ দিকে একটি দাঁত ভেঙে ধারালো হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯ ০১:১৬
Share:

আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে রোগীদের ভিড়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে চিকিৎসকদের উপস্থিতি ঘিরে তৈরি হল বিতর্ক। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার। বহির্বিভাগে আসা রোগীদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় তাঁদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।

Advertisement

চুঁচুড়ার বাসিন্দা রঞ্জন নন্দী কলকাতা স্টেশনের ফুড স্টলে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করেন। এ দিন তিনি জানান, তাঁর চোয়ালের বাঁ দিকে একটি দাঁত ভেঙে ধারালো হয়ে গিয়েছে। তাতে প্রায়ই জিভ কেটে যাচ্ছে। সমস্যার সমাধানে তিনি সকাল সাতটা নাগাদ ডেন্টাল কলেজের বহির্বিভাগে এসেছিলেন। রঞ্জনের কথায়, ‘‘দশটা নাগাদ টিকিট কেটে ওরাল ডায়াগনসিস বিভাগে যাই। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারেরা দেখে বলেন, সিনিয়রদের দেখাতে হবে।’’ পরামর্শ শুনে সিনিয়র চিকিৎসকদের খোঁজ করতে গিয়ে তাঁদের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ রঞ্জনের। তাঁর কথায়, ‘‘সিনিয়র চিকিৎসকদের খোঁজ করলে জানতে পারি, তাঁরা এবিভিপি-র অনুষ্ঠানে আছেন। বহু ক্ষণ অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু ডাক্তারবাবুরা না আসায় কাজে চলে যাই।’’

দমদমের বাসিন্দা গৌতম বসু বলেন, ‘‘আমার আক্কেল দাঁতের সমস্যা। হলঘরের ডাক্তারবাবুরা বললেন, বড় ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কেউ আসছেন না দেখে ফিরে যাই। আমারও তো সময়ের দাম আছে!’’

Advertisement

অসন্তুষ্ট রোগীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, ছাত্র সংগঠনের অনুষ্ঠানে চিকিৎসকেরা কী করছিলেন? যদিও অনুষ্ঠানের জন্য রোগী পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে এবিভিপি ইউনিটের সম্পাদক সুশোভন রায় বলেন, ‘‘পাঁচ-ছ’জন সিনিয়র চিকিৎসক এসেছিলেন। কিন্তু তাঁদের কেউ ডিউটি কামাই করেননি। রোগীর স্বার্থে তাঁদের পরিবর্তে কেউ না কেউ বিভাগে ছিলেন। ওরাল ডায়াগনসিসের বিভাগীয় প্রধান নিজে রোগী দেখেছেন।’’ সুশোভন জানান, জাতীয় ছাত্র দিবস হিসেবে ‘বিদ্যার্থী দিবস’ পালিত হয়েছে। তাই সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

কলেজ সূত্রের খবর, সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র শাখা আয়োজিত ‘বিদ্যার্থী দিবস’-এর জন্য সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের অনুপস্থিতি ঘিরে বহির্বিভাগে এ দিন হইচইও হয়। রোগী অসন্তোষের কথা স্বাস্থ্য ভবন পর্যন্ত পৌঁছয় বলে খবর। রোগীদের বক্তব্যকে মান্যতা দিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট সভাপতি কুণালকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘তাঁদের হয়রানি হয়েছে খবর পেয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আমরাও অভিযোগ জানিয়েছি।’’

সুপার রাহুল সামন্ত জানিয়েছেন, উপরমহলের অভিযোগ পেয়ে তিনি নিজে তার সত্যতা খতিয়ে দেখতে যান। তবে একই সঙ্গে রাহুলবাবু বলেন, ‘‘কোনও রোগী আমাকে কিছু জানাননি। বহির্বিভাগের টিকিট পাওয়ার পরে রোগীরা প্রথম যে বিভাগে যান, সেখানে দেখেছি প্রতিটি টেবিলে চিকিৎসক রয়েছেন।

বিভাগীয় প্রধানও জানিয়েছেন, তেমন অসুবিধা হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন