বিদেশে তৈরি সোনার বিস্কুট পাচার হয়ে এসেছিল কলকাতায়। শিয়ালদহের একটি হোটেলে হানা দিয়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার সেই সোনা বাজেয়াপ্ত করেছে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। গ্রেফতার হয়েছেন মিজোরামের দুই বাসিন্দা। কলকাতার যে ব্যক্তিকে সোনা তুলে দেওয়ার কথা ছিল, তাঁর খোঁজ করছে ডিআরআই।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিআরআই জানতে পারে, মিজোরাম থেকে পল এন কে ডালা ও বিয়াকসাঙ্গা সাইলো নামে দুই ব্যক্তি সোনার বিস্কুট নিয়ে শহরে এসেছেন। শিয়ালদহের সার্পেন্টাইন লেনের একটি হোটেলে তাঁরা উঠেছেন। শুক্রবার ডিআরআই অফিসারেরা হোটেলটিতে হানা দেন। ঘরে তখন ডালা (৫৯) ও সাইলো (২১) ছাড়াও থাংজামা নামে মিজোরামের আরও এক বাসিন্দা ছিলেন। ডালা ও সাইলো সোনার বিস্কুটের কথা অস্বীকার করেন। তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করে ৭০টি সোনার বিস্কুট পাওয়া যায়। ডিআরআই সূত্রে খবর, এক একটি বিস্কুটের ওজন ১৬৫ গ্রামেরও বেশি। সব মিলিয়ে ১১ কেজির বেশি সোনা মিলেছে যার বাজারদর ৩ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকারও বেশি। ডালা ও সাইলোকে শনিবার আদালতে তোলা হয়। তাঁদের ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজত হয়েছে। জেলে তাঁদের জেরার জন্য অনুমতি চেয়েছেন ডিআরআই-এর আইনজীবী তাপস বসু।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মায়ানমার থেকে সীমান্ত টপকে ওই চোরাই সোনার বিস্কুট মিজোরামে ঢোকে। বেশিরভাগ সোনাই সুইৎজারল্যান্ডে তৈরি বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। ডিআরআই সূত্রে খবর, ডালা ও সাইলো সোনা নিয়ে ট্রেনে চেপে কলকাতায় আসেন। ডিআরআই-এর এক অফিসারের কথায়, ‘‘এই সব পাচারকারীদের কাছে একটি ফোন নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়। এঁরা কলকাতায় এসে সেই নম্বরে ফোন করলে এক ব্যক্তি টাকা নিয়ে এসে সোনা নিয়ে যান। আগেও চোরাচালানকারী ধরা পড়ার পরে, তাঁদের থেকে মোবাইল নম্বর পেয়ে সেই ব্যক্তির কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছি। ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে নম্বরটি যাঁর নামে নেওয়া তিনি এ সম্পর্কে বিন্দুবিসর্গ জানেন না।’’ ডিআরআই সূত্রে খবর, এ ভাবে এক বার ৯৫ বছরের এক বৃদ্ধের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন অফিসারেরা। তাঁরা দেখেন, ওই বৃদ্ধ বিছানা থেকেই উঠতে পারেন না। হোটেল থেকে আটক হওয়া মিজোরামের তৃতীয় বাসিন্দা থাংজামা এই সোনা পাচারের সঙ্গে যুক্ত নন বলেই জেনেছে ডিআরআই। তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।