বিষমদ-কাণ্ডে তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আট বছর ধরে সে জেলে বন্দি। আর বন্দি অবস্থাতেই জেলের ভিতরে সে শুরু করেছিল মাদকের কারবার।
আলিপুর জেলে মাদক পাচার-কাণ্ডে ধৃত চিকিৎসক অমিতাভ চৌধুরীকে জেরার পরেই ওই বন্দির ব্যবসার কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্রেই জেলের মধ্যে মাদক ব্যবসার নয়া অভিযোগে ফের গ্রেফতার করা হয়েছে বক্রেশ্বর মোদক নামে ওই বন্দি এবং তার স্ত্রী নমিতা মোদককে।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোচারণের বেলাইচণ্ডীর বাড়ি থেকে নমিতা মোদককে গ্রেফতার করেন আলিপুর থানার তদন্তকারীরা। তার আগে শনিবার আলিপুর জেল থেকেই গ্রেফতার করা হয় বক্রেশ্বরকে। সে ২০১১ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগ্রামপুর বিষমদ-কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত। ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে আলিপুর জেলেই ছিল সে। আর সেখানে বসেই গত এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলের ভিতর মাদকের কারবার শুরু করেছিল সে। তাকে জেরা করেই জানা যায়, নমিতাও জেলবন্দি স্বামীকে মাদক পাচারে সাহায্য করেছে।
সম্প্রতি আলিপুর জেলে ঢোকার সময়ে চিকিৎসক অমিতাভ চৌধুরীর ব্যাগে তল্লাশি চালান জেলের কর্মীরা। তাঁর ব্যাগ থেকে মেলে দু’কেজি গাঁজা, চার লিটার মদ, ৩৫টি মোবাইল ফোন এবং প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। পরে কারা দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে নাকতলার বাসিন্দা ওই চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তকারীরা জানান, ধৃত চিকিৎসককে মদ-সহ বিভিন্ন মাদক এনে দিত নমিতা। নিজের ক্ষমতা এবং পদাধিকারবলে অমিতাভ জেলে ঢুকে সে সব পৌঁছে দিতেন বিচারাধীন বন্দি বক্রেশ্বরের কাছে। জেল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের দাবি, চিকিৎসকের কাছ থেকে ওই মাদক পাওয়ার পরেই তা জেল বন্দিদের কাছে বিক্রি করত বক্রেশ্বর। ঘটনার দিন জেলের অদূরেই নমিতা মাদক ও অন্য সামগ্রী ওই চিকিৎসকের হাতে তুলে দিয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত রয়েছেন জেলের বেশ কয়েক জন নিচুতলার কর্মী। তাঁদের মদতেই বক্রেশ্বর ওই ব্যবসা শুরু করেছিল। এক পুলিশকর্তা বলেন,‘‘তদন্তে বেশ কয়েক জনের নাম জানা গিয়েছে। পঞ্চাশ থেকে একশো টাকার বিনিময়ে মাদক, মদ বা মোবাইল বন্দিদের হাতে তুলে দেওয়া হত।’’