বিদেশি কুরিয়ার ধরে হংকংয়ে পৌঁছত মাদক

পুলিশের খবর, এর আগেও অন্তত দু’বার এই কায়দায় মাদক পাচার করেছে অভিযুক্তেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০১:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সংস্থা। তাদের পরিষেবা ব্যবহার করেই বিদেশে মাদক পাচার করছিল দুষ্কৃতীরা। সম্প্রতি গয়নার ভিতরে ভরে মাদক পাচারের যে চক্র লালবাজার পাকড়াও করেছে, তাদের কাছ থেকেই এই তথ্য জেনেছেন গোয়েন্দারা।

Advertisement

লালবাজারের খবর, চলতি বছরে এ ভাবে প্রায় ছ’কেজি চরস হংকংয়ে পাচার করা হয়েছে। এই চক্রের মূল পান্ডা হিসেবে উঠে এসেছে ছোটু বলে এক জনের নাম। সে হংকংয়ে বসেই এই কারবার চালাচ্ছে। খাস কলকাতা থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মাদক পাচারের চক্র চলছে গত তিন বছর ধরে।

পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকার ষষ্ঠীতলা রোডে একটি ঘুপচি ঘরে হানা দিয়ে নার্কোটিক্স শাখার গোয়েন্দারা বাজেয়াপ্ত করেন ৬০টি ঝুটো বালা ও চুড়ি। যার ভিতরে ছিল মাদক।

Advertisement

গ্রেফতার করা হয় আব্দুল রজ্জাক নামে এক ব্যক্তিকে। এই ঘটনায় জড়িত আরও তিন জন ফেরার। লালবাজারের খবর, চক্রের মূল চাঁই ছোটু বলে এক ব্যক্তি। সে হংকংয়ে বসে এই চক্র চালায়। এখানে ছোটুর এজেন্ট হিসেবে সঞ্জু বলে এক জনের নাম উঠে এসেছে। এই কাজ করার জন্য তাকে ছোটু মাসে ১৫ হাজার টাকা দিত বলে জেনেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে মেয়েদের ঝুটো বালা ও চুড়ি হংকং সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রফতানি করা হয়। সেই বালা ও চুড়ির ফাঁপা অংশে মাদক পুরে পাচার করত এই চক্রটি। রজ্জাক ও তার সঙ্গীরা বালার ফাঁপা অংশে মাদক পুরতে দক্ষ। মাদক পোরার কাজ করার জন্য বালাপিছু ৩৫ টাকা এবং চুড়িপিছু ১০০ টাকা করে পেত তারা।

তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা সঞ্জুর পাশাপাশি রগিব বলে আরও এক জনের নাম জানতে পেরেছেন। তাঁরা এ-ও জেনেছেন, ছোটুর নির্দেশে রগিব মুম্বই থেকে গত মাসের মাঝামাঝি মেথাকোয়ালন নামে ওই মাদক কিনে এনেছিল। কলকাতায় এনে সেটি সে তুলে দেয় সঞ্জুর হাতে। সঞ্জু আবার খিদিরপুরের বাবুবাজার থেকে ৩০০টি ঝুটো বালা ও মাদক কিনে সেগুলি রজ্জাকদের দিয়েছিল। এই ঝুটো বালার ভিতরে মাদক পোরা হয়ে গেলে সেগুলি দিল্লি ও মুম্বইয়ের আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সংস্থার মাধ্যমে বিদেশে পাচার হত। পুলিশের দাবি, কুরিয়ার সংস্থা ও বিমানবন্দরের স্ক্যানার ফাঁকি দেওয়ার জন্য বালাগুলিকে কার্বন পেপার দিয়ে মোড়ানো হত। গত ২৪ জুন বালার ভিতরে মাদক পোরার কাজ শুরু হয়েছিল। ২৬ জুন তা শেষ হয়।

পুলিশের খবর, এর আগেও অন্তত দু’বার এই কায়দায় মাদক পাচার করেছে অভিযুক্তেরা। এমন পদ্ধতিতে গত ফেব্রুয়ারিতে তিন কিলোগ্রাম এবং এপ্রিলে আড়াই কিলোগ্রাম চরস হংকংয়ে পাচার করা হয়েছিল।

গোয়েন্দারা বলছেন, পঞ্চাশের দশকে মেথাকোয়ালন প্রথম ভারতে আসে। তবে তখন সেটি ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হত। পরবর্তীকালে তার ব্যবহার শুরু হয় মাদক হিসেবে। কোনও কোনও দেশে একে সোপার্স বা ম্যানড্রেক্স বলা হয়। কোকেনের বিকল্প পার্টি ড্রাগ হিসেবেও মেথাকোয়ালনের চল রয়েছে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন