চাদর-চাপা শিশুপুত্রের দেহ, ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলেন মা

ভরবিকেলে ভারী কিছু পড়ার শব্দে ছুটে এসে প্রতিবেশী। দেখলেন, পাড়ার মাঠে এক মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তাঁর চিৎকার শুনে অন্য বাসিন্দারা এসে মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। তার পর তাঁর বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখেন, একটি ঘরে আপাদমস্তক চাদর চাপা দিয়ে শুয়ে রয়েছে মহিলার শিশুপুত্র। চাদর সরাতেই দেখা গেল, শিশুটির দেহ নিথর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভরবিকেলে ভারী কিছু পড়ার শব্দে ছুটে এসে প্রতিবেশী। দেখলেন, পাড়ার মাঠে এক মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তাঁর চিৎকার শুনে অন্য বাসিন্দারা এসে মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। তার পর তাঁর বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখেন, একটি ঘরে আপাদমস্তক চাদর চাপা দিয়ে শুয়ে রয়েছে মহিলার শিশুপুত্র। চাদর সরাতেই দেখা গেল, শিশুটির দেহ নিথর। গলায় কালশিটে দাগ! পাশে বসা দিদিমা শুধু বললেন, ‘‘ছেলেটাকেও মেরে দিয়েছে।’’

Advertisement

রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দমদমের এম সি গার্ডেন রোডের ঘটনা। পুলিশ সূত্রের খবর, শিশুটির নাম আথান আব্রাহাম (৮)। মা পৌলমী সেনকে নাগেরবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। রাতে অবস্থার অবনতি হওয়ায় আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পৌলমীর মা মালবিকা সেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর। বাবা নেই, একমাত্র ভাই মার্কিন প্রবাসী। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, পৌলমী বিবাহবিচ্ছিন্না। তবে পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চিত নয়।

পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মালবিকাদেবী জানিয়েছেন, তাঁর মেয়েই নাতিকে খুন করে তিনতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি দুপুরে ঘুমের ওষুধ খেয়ে পাশের ঘরে শুয়েছিলেন। শব্দ পেয়ে এসে দেখেন, এই ঘটনা।

Advertisement

আরও পড়ুন: বৃদ্ধ বাবাকে মারধর, অভিযুক্ত পুত্র ও পুত্রবধূ

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে একটি ছেঁড়া দড়ির ফাঁস মিলেছে। ঘরে মলও পড়ে ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশ সূত্রের দাবি, শিশুটিকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করা হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পৌলমীর হাতে ও পেটে একাধিক গভীর কাটা ক্ষত মিলেছে। তা থেকে তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, ঝাঁপ দেওয়ার আগে সম্ভবত নিজেই হাতের শিরা ও পেট কাটার চেষ্টা করেছিলেন পৌলমী। ফাঁস তিনি নিজের গলাতেও দিতে গিয়েছিলেন কি না, সেটা স্পষ্ট নয়।

আরও পড়ুন: নিউটাউনে মধুচক্রের হদিশ, ধৃত ৩ তথ্যপ্রযুক্তিকর্মী-সহ ১১

ওই বাড়িতে বছরখানেক ভাড়াটে হিসেবে রয়েছে সেন পরিবার। স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় বাগুই জানান, এলাকার এক মহিলার চিৎকার শুনে তিনি এসে দেখেন, পৌলমী পড়ে রয়েছেন। তাঁর কথায়, পৌলমী মুখ তুলে তাঁকে বলেন, ‘‘বাগুইদা আমায় বাঁচাও।’’ সঞ্জয়বাবুরাই তখন অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে পৌলমীকে হাসপাতালে পাঠান। বা়ড়িওয়ালা অজয় দে-র ভাই অর্জুন দে বলেন, ‘‘আমরা কোনও দিন অশান্তি টের পাইনি।’’ তবে পরিবারের দাবি, পৌলমী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন