Durga Puja 2020

অতিমারির বছরে পুজোয় গুরুত্ব পাচ্ছে সুরক্ষা-বিধি

পুজোর উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এই সুরক্ষার ব্যবস্থা শুধু পুজোর দিনগুলির জন্য নয়, বিধি মেনে চলা হচ্ছে মণ্ডপ তৈরির সময় থেকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৫৯
Share:

ছবি: এএফপি।

পুজো সাবেক হোক বা থিমের, অতিমারি পরিস্থিতিতে মণ্ডপ ঘিরে সুরক্ষার বলয় তৈরি করতে চাইছেন উদ্যোক্তারা। কোথাও বসছে জীবাণুনাশের টানেল, কোথাও কোভিড কর্নার কিয়স্ক, কোথাও আবার হাত জীবাণুমুক্ত করার বিশেষ যন্ত্র। বিধাননগর, নিউ টাউন, রাজারহাট-গোপালপুর এলাকায় পুজোর প্রস্তুতির ছবিটা এমনই। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী মণ্ডপে ঢুকতে দেওয়া হবে না দর্শনার্থীদের।

Advertisement

তবে পুজোর উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এই সুরক্ষার ব্যবস্থা শুধু পুজোর দিনগুলির জন্য নয়, বিধি মেনে চলা হচ্ছে মণ্ডপ তৈরির সময় থেকেই। পুজোর দিনগুলিতে আরও কঠোর ভাবে বিধি মেনে চলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি, করোনা ও আমপানের জেরে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টাও করছেন উদ্যোক্তারা।

সল্টলেকের এ কে ব্লকের পুজোর কর্মকর্তা রাজা বণিক জানান, তাঁদের এ বারের থিম মনুষ্যত্ব। ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবন। মণ্ডপের বেশ কিছুটা আগে একটি নির্দিষ্ট ঘেরা জায়গা থাকবে। সেখান অবধিই আসতে পারবেন দর্শনার্থীরা। থাকছে হাত জীবাণুমুক্ত করার বিশেষ যন্ত্রও।

Advertisement

এফডি ব্লকের পুজোর থিম হয়েছে শিশু-কিশোরদের কথা ভেবে। ‘জাঙ্গল বুক’-এর আদলে মণ্ডপসজ্জা। মণ্ডপের এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। অঞ্জলি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে অনলাইনে। এক কর্মকর্তা বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সরকার এবং হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে চলার উপরে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিজে ব্লকের পুজোর কর্মকর্তা উমাশঙ্কর ঘোষদস্তিদার জানান, তাঁদের পুজোর জায়গা অনেক বড়। ফলে বিধি মেনে ভিড় নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হবে না। থাকছে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থাও। সল্টলেকের এ-ই(পার্ট ওয়ান) ব্লকের পুজোয় থিম ‘বন্ধন’। এখানেও ভাবনায় উঠে এসেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা। করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এখানেও।

এ বারের পরিস্থিতিতে সাবেক পুজোয় ফিরেছেন লাবণি আবাসনের উদ্যোক্তারা। নাটমন্দিরের আদলে মণ্ডপ ও সাবেক প্রতিমা। সরকারি নিয়ম মেনে এলাকা জীবাণুমুক্ত করা ও দূরত্ব-বিধি মেনে চলায় জোর দেওয়া হচ্ছে।

সল্টলেকের এজে, বিই(পূর্ব), এডি, এসি, জিডি ব্লকেও এ বার সাবেক মণ্ডপ ও প্রতিমা করা হচ্ছে। এডি ব্লকে মণ্ডপের বাইরে বসছে কোভিড কর্নার কিয়স্ক। সেখানে থাকবে একটি মেডিক্যাল টিম।

একই ছবি রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার পুজোগুলিতেও। সুরক্ষা নিয়ে বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে পুজো কমিটিগুলি। বাগুইআটি অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা পার্থ সরকার বলেন, ‘‘খোলামেলা মণ্ডপ হয়েছে। সাবেক পুজো ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সব নিয়ম মেনে সুরক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে বিপর্যয়ে পড়া একাধিক পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছে আমাদের ক্লাব।’’

রেলপুকুর ইউনাইটেড ক্লাবের কর্মকর্তা উৎপল চন্দ্র জানান, করোনা ও আমপানে বিপর্যস্ত মানুষদের মণ্ডপ তৈরির সময়ে কাজ দেওয়া হয়েছে। দূর থেকেই প্রতিমা দর্শন যাতে করা যায়, তেমনই ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঙ্গে এলাকা জীবাণুমুক্ত করার সব রকমের ব্যবস্থা থাকবে।

অর্জুনপুর আমরা সবাই ক্লাবের তরফে তমাল দত্ত জানান, তাঁদের থিম কালচক্র। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রভাব ধরা পড়বে মণ্ডপসজ্জায়। দূর থেকেই দেখা যাবে মণ্ডপ ও প্রতিমা। পুজোর দিনগুলিতে সব আচার পালনেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জগৎপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজো মহিলারা পরিচালনা করবেন। উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, একচালার সাবেক প্রতিমা ও খোলামেলা মণ্ডপে যাবতীয় বিধি মেনে হবে এ বারের পুজো।

কেষ্টপুরের প্রফুল্লকানন বালকবৃন্দ (পূর্ব)-এর পুজোর থিম সবুজ রক্ষা। সবুজ ধ্বংস হলে

কী হয় এবং সবুজ থাকলে কী হয়— দু’দিকই তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপসজ্জার মাধ্যমে। তবে করোনা বিধি মেনে চলার দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন