পুজোর মণ্ডপে ঢুকলেই দাঁড়িয়ে কি উন্নয়ন

পাটুলির একটি পুজোর হোর্ডিংয়ে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের সেই বিতর্কিত উক্তি, ‘রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে।’

Advertisement

সুজিষ্ণু মাহাতো

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৬
Share:

পাটুলির একটি পুজোর সেই হোর্ডিং। নিজস্ব চিত্র

কলকাতার পুজোতেও যেন কেষ্টর ছায়া!

Advertisement

পাটুলির একটি পুজোর হোর্ডিংয়ে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের সেই বিতর্কিত উক্তি, ‘রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে।’ তবে ওই পুজো কমিটি, পাটুলি সেন্ট্রাল ক্লাবের বক্তব্য, পুজোর থিমের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই, লোকজনকে চমক দিতেই তাঁরা এটা করেছেন।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট) বলেছিলেন, ‘‘কোনও বাধা না মেনে যে সব প্রার্থী তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে চাইবেন তাঁরা যখনই মনোনয়ন করতে বেরোবেন, দেখবেন রাস্তায় ‘উন্নয়ন’ দাঁড়িয়ে আছে। কখনও বা ব্লক অফিসে ‘উন্নয়ন’ দাঁড়িয়ে থাকবে। চারদিকে এত উন্নয়ন দেখে ইচ্ছে থাকলেও ওই ব্যক্তিরা আর মনোনয়ন জমা দিতে যাবেন না।’’

Advertisement

অনুব্রতর এই বক্তব্য ঘিরে বিতর্কও বেধেছিল বিস্তর। সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। তবে যত বিতর্কই হোক, রাজ্য জুড়ে লোকের মুখে মুখে ফিরেছিল ওই উক্তি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৈরি হয়েছিল অজস্র পোস্টার, মিম। পুজোয় লোক টানতে সেই জনপ্রিয়তাকেই হাতিয়ার করা হচ্ছে বলে জানালেন পুজোর সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রাহা।

কিন্তু এই উক্তির সঙ্গে তাঁদের পুজোর যোগ কোথায়? সৌরভ বললেন, ‘‘রাজনীতির সঙ্গে পুজোর কোনও যোগ নেই। আমরা দেখাতে চাইছি উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশের সহাবস্থান। তাই তার ক্যাচলাইন কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সেখান থেকেই এই বাক্যটি দিয়ে হোর্ডিং করার সিদ্ধান্ত হয়।’’

সৌরভ জানান, এ বার তাঁদের পুজো মণ্ডপ দেখে মনে হবে একটি নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটবাড়ি। তার ভিতরেই থাকবে গ্রামীণ পরিবেশ। সেখানেই থাকবেন দেবী। শিল্পী রাজু সরকারের ভাবনায় তৈরি হচ্ছে এই মণ্ডপ। সৌরভের কথায়, ‘‘উন্নয়ন ছাড়া জীবনযাপন সম্ভব নয়। আবার পরিবেশকে ধ্বংস করে উন্নয়ন করলে কী হয়, তা কেরলের বন্যার মতো নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকেই স্পষ্ট। তাই আমরা দুটোকেই রাখতে চেয়েছি।’’

তবে অন্য পুজোর সঙ্গে টক্কর দিতেই যে এমন ‘অভিনব’ টিজার তাঁরা বেছেছেন, তা মানছেন সৌরভ। তা থেকে ভাল সাড়াও মিলছে বলে দাবি তাঁর। তিনি বললেন, ‘‘এখন পুজো একটা ইভেন্ট। সবাই লোক টানতে চায়। আমাদের টিজার দেখেও অনেকে নানা প্রশ্ন করছেন। তবে টিজার দেখে এক রকম ভেবে পুজো দেখতে এলেও তাঁরা হতাশ হবেন না, এটুকু বলতে পারি।’’

এই পুজোর খবর পৌঁছেছে খোদ অনুব্রত মণ্ডলের কানেও। তিনি কোনও মন্তব্য না করলেও, ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, পুজো পুজোর জায়গায়, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়।

সহ প্রতিবেদন: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন