মোবাইল-লাইভেও চলছে কেনাকাটা

শনি আর রবিবার মিলিয়ে ছুটির দিন মোট চারটে। তার আগে এ দিন, মাসের শেষ রবিবারে সকাল থেকেই ক্রেতার ঢল বাজারগুলিতে।

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৭
Share:

কেনাকাটা: হাতিবাগানে রবিবারের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

ধুতির ধোপদুরস্ত‌ অবস্থা চলে গিয়েছে। পাঞ্জাবির বদলে গায়ে বহুজাতিক সংস্থার বিজ্ঞাপন দেওয়া টি-শার্ট! এক টানা ঢাক বাজিয়ে ক্লান্ত ওঁদেরই এক জন জিরিয়ে নিচ্ছিলেন হাতিবাগান বাজারে। বয়স পনেরো-ষোলো। বলল, ‘‘শনি-রবিবার চলে আসতে হয়। বাজার শেষ হলেই ঢাক নিয়ে মণ্ডপে চলে যেতে হবে। আমাদের পুজো এ বার দেড় মাসের। বাড়ি ফিরব বিসর্জনের পরে..!’’

Advertisement

কথা শেষ হল না। বাজার থেকে নির্দেশ এল, ‘‘বহুক্ষণ হল। এ বার বাজাও!’’ প্রবল উৎসাহে ঢাকে কাঠি পড়ল ফের। পুজোর বাকি মেরেকেটে দু’সপ্তাহ। শনি আর রবিবার মিলিয়ে ছুটির দিন মোট চারটে। তার আগে এ দিন, মাসের শেষ রবিবারে সকাল থেকেই ক্রেতার ঢল বাজারগুলিতে। বিকেলের পরে জনসমুদ্রের চেহারা নিল সেই ভিড়। ‘হাতিবাগান বাজার মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে’র সভাপতি রঞ্জন রায় বলেন, ‘‘সোমবার থেকে মহালয়া পর্যন্ত ভিড় আরও বাড়বে। অনেকেরই এখনও মাইনে হয়নি!’’

সঙ্গীর সঙ্গে বেরিয়েছেন তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘বড় কেনাকাটা এক তারিখের পরে। আজ ছোট জিনিসগুলো কিনছি।’’ যদিও এ দিনের ভিড়ে মন ভরেনি হাতিবাগান ‘শ্রী মার্কেটে’র ব্যবসায়ী শম্ভু সাহার। বললেন, ‘‘ভিড় দেখে মনে হবে মশা গলারও জায়গা নেই। কিন্তু একসঙ্গে চার জন এসেছেন! সকলে তো কিনছেন না!’’ মাঝেরহাটে লেবেল ক্রসিংয়ের কাজের জন্য আবার শনিবার রাত থেকে এ দিন বিকেল চারটে পর্যন্ত বন্ধ ছিল শিয়লদহ-বজবজ শাখার ট্রেন চলাচল। ফলে বহু ক্রেতাই আসতে পারেননি বলে মত ব্যবসায়ীদের।

Advertisement

বাইপাসের ধারের শপিং মলে মোবাইল হাতে ছুটে বেড়াতে দেখা গেল এক মহিলাকে। বললেন, ‘‘সামনের সপ্তাহে মেয়ে টরন্টো থেকে ফিরছে। লাইভ দেখিয়ে পোশাক কিনতে হচ্ছে। ওর সহজে পছন্দ হয় না।’’ এক তরুণ আবার ‘ট্রায়াল রুম’-এর বাইরে মোবাইল হাতে দীর্ঘক্ষণ। জানালেন, ছবি তুলে মা-কে পাঠিয়েছেন। ভাল লাগছে কি না, উত্তর তখনও আসেনি!

ভিড়ের চাপে পা ফেলারই জায়গা নেই ধর্মতলায়। বিরক্ত মুখে ফুটপাতে উঠে দাঁড়ালেন এক মহিলা। বললেন, ‘‘দু’দিন ধরে ঘুরেও জুতোর দোকানে ঢোকা গেল না! ঠাকুর দেখতেও তো এত লাইন হয় না!’’ তাঁর মতে, দাম কমের বিজ্ঞাপনেই যত বিপত্তি।

পাওয়া-না পাওয়ার দোলাচলেই দিন গুণছে শহর।— ‘‘আর যেন কত দিন বাকি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন