Bankim Setu

মেরামতির কাজ চলাকালীন ভেঙে পড়ল জীর্ণ বঙ্কিম সেতুর চাঙড়

হাওড়া সেতুর সঙ্গে সংযোগকারী এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটির মেরামতির জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৩ ০৭:২২
Share:

দুরবস্থা: রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পথ-বিভাজিকার স্ল্যাবের জীর্ণ অবস্থা বঙ্কিম সেতুতে। সেখানে থেকেই নীচে ভেঙে পড়েছিল চাঙড়। সোমবার।  ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

গত বছর হাওড়ার বঙ্কিম সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে রাজ্য সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটি সেতুটির বিভিন্ন অংশ অবিলম্বে মেরামত করার জন্য সুপারিশ করেছিল। যার মধ্যে
অন্যতম ছিল, এক্সপ্যানশন জয়েন্ট পাল্টানো এবং সেতুর মধ্যবর্তী অংশে কেব্‌ল ডাক্টের উপরে থাকা কংক্রিটের ব্লকের মেরামতি। সম্প্রতি সেতুর মেরামতির কাজ শুরু হলেও কেব্‌ল ডাক্টের উপরে থাকা ভগ্নপ্রায় কংক্রিটের ব্লকগুলি দীর্ঘ দিন না সারানোর ফল হাতেনাতে মিলল সোমবার। মঙ্গলাহাট চলার সময়ে মহাত্মা গান্ধী রোডের সংযোগস্থলে উপর থেকে ভেঙে পড়ল সেই কংক্রিটের ব্লকের একাংশ। আর বাকিটা বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রইল রাস্তার উপরে। ঘটনার সময়ে সেতুর নীচে লোকজন না থাকায় বড়সড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। তবে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনবহুল ওই রাস্তায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে দমকলে খবর দেওয়া হলে দমকলবাহিনী এসে সেতু থেকে ঝুলতে থাকা কংক্রিটের চাঙড় নামিয়ে আনে।

Advertisement

হাওড়া সেতুর সঙ্গে সংযোগকারী এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটির মেরামতির জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। কেএমডিএ-র বক্তব্য, বঙ্কিম সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে বিশেষজ্ঞ কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করে বিভিন্ন সুপারিশ করেছিল। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কোনও রকম রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় সেতুটির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ অবিলম্বে মেরামতির সুপারিশ করেছিল ওই কমিটি। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেতুটির কয়েকটি এক্সপ্যানশন জয়েন্ট অকেজো হয়ে গিয়েছে। সেতুর কয়েক জায়গায় ফাটল বা চিড়ও দেখা গিয়েছে। কিছু জায়গায় গর্ত হয়ে গিয়েছে। কেব্‌ল ডাক্টের উপরে থাকা কংক্রিটের ব্লকগুলি ভেঙে গিয়েছে। পথ-বিভাজিকা উঁচু না হওয়ায় বিপদের ঝুঁকি নিয়ে সেখান দিয়েই মানুষ পারাপার করছেন।

কেএমডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের তরফে হাওড়া সিটি পুলিশকে চিঠি দিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সেতুটি দিনের বেলায় আংশিক বন্ধ রাখার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় মেরামতির কাজ শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। সম্প্রতি সেই অনুমতি মেলায় কাজ শুরু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মেরামতির কাজ করার সময়েই এ দিন সেতুর পথ-বিভাজিকার ফাঁক গলে কেব্‌ল ডাক্টের উপরের চাঙড় ভেঙে পড়ে। অন্য অংশটি ঝুলতে থাকে। কিছু ক্ষণের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে দমকল এসে ঝুলন্ত চাঙড়টি নামিয়ে আনলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

Advertisement

এ দিন যে কাজ করার সময়েই ওই ঘটনা ঘটেছে, তা মানছেন সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মিস্ত্রিরাই কাজ করার সময়ে স্ল্যাবগুলি হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে দেখছিলেন। তখনই সেটির একাংশ ভেঙে পড়ে। আমরা বলে দিয়েছি, কাজ করার আগে নীচে জাল পেতে নিতে হবে। যাতে কিছু ভেঙে পড়লে জালে আটকে যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন