ইস্ট-ওয়েস্টে শুরু মহাকরণ স্টেশনের কাজ

মেট্রো রেল সূত্রের খবর, ২০২০ সালের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্মাতা সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল নিগম। তাই জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছে। এ দিন সতীশ জানান, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ— এই পর্যায়ের সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ০২:১২
Share:

ছবি: সংগৃহীত

উড়ালপুলের নীচ দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শেষ। এ বার শুরু হচ্ছে মহাকরণ স্টেশনের নির্মাণ। শনিবার কলকাতা মেট্রো রেল নিগমের এমডি সতীশ কুমার জানান, রাতেই লালদিঘির কাছে নির্দিষ্ট জমি ঘেরার কাজ শুরু হয়েছে। সেই জন্য বি বা দী বাগ থেকে উত্তর কলকাতার ট্রাম পরিষেবা তিন বছরের জন্য বন্ধ থাকবে। এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে পরিবহণ দফতরকে প্রায় ১১ কোটি টাকা দিয়েছে নিগম।

Advertisement

সতীশ জানান, স্ট্র্যান্ড রোড থেকে লালদিঘি— এই এক কিলোমিটার দূরত্বের প্রথম ১০০ মিটারের কাজ শেষ হয়েছে। এ বার সুড়ঙ্গ তৈরির দ্বিতীয় দফার কাজ হবে। তার জন্য ছ’টি বাড়ির বাসিন্দাদের সাময়িক ভাবে স্থানান্তরিত করতে হবে। কিন্তু প্রথম দফার মতো রাস্তা বন্ধ করার কোনও সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। নিগমের এমডি-র মতে, ‘‘গঙ্গার তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি ছিল প্রথম চ্যালেঞ্জ। তাতে পাশ করার পরে দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জেও সসম্মানে উত্তীর্ণ আমরা।’’

মেট্রো রেল সূত্রের খবর, ২০২০ সালের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্মাতা সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল নিগম। তাই জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছে। এ দিন সতীশ জানান, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ— এই পর্যায়ের সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হবে। শুক্রবার রাত থেকে দত্তাবাদেও ইস্ট-ওয়েস্টের সেতুর শেষ পর্যায়ের গার্ডার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগান, এই পর্যায়ের কাজ শেষ হবে বলে মনে করছেন নিগম-কর্তারা।

Advertisement

আরও পড়ুন: পাশে হাসপাতাল, কোলে ফিরল মেয়ে

ডালহৌসি চত্বরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরি নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। এই কাজে অফিসপা়ড়ার পুরনো ও ঐতিহ্যশালী বাড়িগুলির ক্ষতি হবে কি না, তা নিয়ে গোল বেধেছিল। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের ছাড়পত্র নিয়ে সমস্যার ফলে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। তার পরে ব্রেবোর্ন রোড উড়ালপুলের তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ নিয়েও ধন্দ ছিল। কিন্তু সে সব আশঙ্কাকে সরিয়ে রেখে নির্বিঘ্নেই মিটে গিয়েছে কাজ। মহাকরণ স্টেশন তৈরির ফলেও আশপাশের কোনও বাড়ির ক্ষতি হবে না বলে নিগমের দাবি।

এ দিন নিগম-কর্তারা জানান, কোনও উড়ালপুলের ভিতের তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করা যে কোনও সময়েই অতি কঠিন কাজ। সামান্য ভুলচুক হলেই উড়ালপুল এবং আশপাশের ঘরবা়ড়ির ক্ষতি হতে পারে। নিগম সূত্রের খবর, কলকাতার তলায় পলিমাটি রয়েছে। তার উপরে পুরনো বা়ড়িগুলি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যথাযথ নিয়ম মেনে তৈরি হয়নি। তাই অত্যন্ত সাবধানে কাজ করতে হয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাড়িগুলির ভিতর কয়েক মিলিমিটার বসে যেতে পারে বা সামান্য চিড় ধরতে পারে। কিন্তু বাড়ি বা উড়ালপুলের কোনও ক্ষতি হয়নি।

নিগম-কর্তারা জানান, বর্তমান মেট্রো, ইস্ট-ওয়েস্ট এবং জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর সংযোগস্থল হবে এসপ্ল্যানেড স্টেশন। তাই ওই স্টেশনটিকে বিশেষ ভাবে তৈরি করা হচ্ছে। মাটির উপর ও নীচ মিলিয়ে চারতলা স্টেশন হবে। মহাকরণ ও এসপ্ল্যানেড স্টেশন তৈরির পরে ট্রাম ও বাসগুমটিগুলি নতুন ভাবে সাজিয়েও দেওয়া হতে পারে বলে নিগম সূত্রের খবর।

নিগমের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জিএসটি চালু হওয়ায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের খরচ বাড়বে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে শনিবারই একটি বৈঠক করেছেন ইস্ট-ওয়েস্ট প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থার কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন