গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ছেলে, পুত্রবধূ দেখা শোনা করেন না। অভিযোগ, বৃদ্ধ দম্পতির সঞ্চয়ের শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিয়েছেন। আর সেই অবসাদেই চলন্ত লঞ্চ থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ মেরে আত্মহত্যার চেষ্টা বৃদ্ধ দম্পতির। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে আহিরীটোলার কাছে।
সকাল প্রায় ১০টা। অফিস টাইমের ভিড়ে ঠাসা লঞ্চ। বাগবাজার ঘাট থেকে লঞ্চটি রওনা দিয়ে এগোচ্ছে আহিরীটোলার ঘাটের দিকে। তখনই হঠাৎ যাত্রীরা দেখেন জলে পড়ে গেলেন দু’জন। সঙ্গে সঙ্গেই লঞ্চের কর্মীরাও নদীতে ঝাঁপ দেন। কোনও মতে উদ্ধার করা হয় দু’জনকেই। তাঁদের লঞ্চে করেই নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়ায়। সেখান থেকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃদ্ধকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বৃদ্ধা এখনও চিকিৎসাধীন।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে তাঁরা দম্পতি। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপকুর হাটখোলাতে বাড়ি। বৃদ্ধের নাম তাপস দত্ত। বয়স প্রায় ৭০ বছর। সিইএসই-তে কাজ করতেন। স্ত্রী শুক্লার বয়স প্রায় ৬২।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তকারীদের বৃদ্ধা জানিয়েছেন, বছর দেড়েক ধরে নিদারুণ অর্থাভাবে কাটাচ্ছেন তাঁরা। বৃদ্ধার অভিযোগ, তাপসবাবু অবসর নেওয়ার পর যে টাকা পয়সা পেয়েছিলেন এবং তাঁদের যা সঞ্চয় ছিল তা পুরোটাই হাতিয়ে নিয়েছে ছেলে এবং ছেলের বউ। তারপর বৃদ্ধ দম্পতির কোনও দায়িত্ব তাঁরা নিতে অস্বীকার করে। বৃদ্ধার অভিযোগ, কার্যত বাধ্য হয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন তাঁরা। আশ্রয় নেন হাওড়া স্টেশন লাগোয়া একটি সস্তার লজে। সেখানে গত প্রায় তিন দিন ছিলেন। কিন্ত সেখানেও টাকা দেওয়ার মতো অবশিষ্ট আর কিছু ছিল না। তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
আরও পডু়ন: সল্টলেকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে নামালেন কন্ডাক্টর, পায়ের আঙুল বাদ গেল ছাত্রীর
আরও পড়ুন: ‘মাস্টারমশাই’কে দেখতে ভিড় কোর্টে
পুলিশ শুক্লা দেবীর বয়ান রেকর্ড করেছে। তদন্তকারীরা বৃদ্ধার পুত্র-পুত্রবধূকেও খবর দিয়েছেন। তাঁদের থানায় দেখা করতে বলা হয়েছে। তাঁদের বয়ানও রেকর্ড করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)