টালিগঞ্জে গাড়ির ধাক্কা সাইকেলে, মৃত্যু প্রৌঢ়ের

পুলিশ সূত্রের খবর, সকালে দেশপ্রিয় পার্কে নিজের কর্মস্থল থেকে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন অনিরুদ্ধবাবু। তখনই টালিগঞ্জের কাছে একটি ছোট মালবাহী গাড়ি তাঁর সাইকেলে ধাক্কা মারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৮ ০২:২৭
Share:

অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী

মেয়ের জন্মদিনে বাইরে থেকে খাবার এনে সকলে মিলে আনন্দ করার পরে বেরিয়েছিলেন কাজে। পরের দিন সকাল হতে না হতেই খবর এল, বা়ড়ির কাছাকাছি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বাবার। শুক্রবার, রিজেন্ট পার্ক এলাকার ঘটনা।

Advertisement

মৃত প্রৌঢ়ের নাম অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী (৫০)। বাড়ি হরিদেবপুর থানা এলাকায়। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, সকালে দেশপ্রিয় পার্কে নিজের কর্মস্থল থেকে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন অনিরুদ্ধবাবু। তখনই টালিগঞ্জের কাছে একটি ছোট মালবাহী গাড়ি তাঁর সাইকেলে ধাক্কা মারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কয়েক ফুট দূরে সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমির সামনে পর্যন্ত তাঁকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় গাড়িটি। এর পরে সেটি ধাক্কা মারে রাস্তার পাশে থাকা কয়েকটি অটোতেও। এর পরেই ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা অটোচালকেরা দৌড়ে গাড়িটি ধরে ফেলেন। তাঁরাই খবর দেন রিজেন্ট পার্কের ট্র্যাফিক গার্ডে। পরে পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় অনিরুদ্ধবাবুকে উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। গ্রেফতার করা হয় ঘাতক গাড়ির চালক দুলাল সর্দারকে। গাড়িটিও আটক করা হয়েছে। পুলিশকে দুলাল জানিয়েছেন, সামনে একটি শিশু চলে আসায় তাকে বাঁচাতে গিয়েই ঘটেছে দুর্ঘটনা। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Advertisement

এ দিকে, সকালে সময় গড়িয়ে গেলেও অনিরুদ্ধবাবু বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়েন পরিবারের লোকজন। তার মধ্যেই পুলিশের ফোন যায়। রিজেন্ট পার্ক থানা থেকে জানানো হয়, একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অনিরুদ্ধবাবুর। ঘটনার পরে বেলায় অনিরুদ্ধবাবুর ১৫০/৬ জজবাগানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, স্থানীয় কাউন্সিলর রত্না চক্রবর্তী সেখানে গিয়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে অনিরুদ্ধবাবুর মেয়ে অঙ্কনা বলেন, ‘‘রাতে যাওয়ার আগে আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে গেল। আর সকালেই বাবা এ ভাবে মারা গেল! আমার আর মায়ের কী হবে?’’

পৈতৃক বাড়িতে স্ত্রী বন্দনা আর মেয়ে অঙ্কনাকে নিয়ে সংসার অনিরুদ্ধবাবুর। সেখানে আরও দুই শরিক পরিবারও আছে। অনিরুদ্ধবাবুর খুড়তুতো ভাই কল্পতরু চক্রবর্তী জানান, তিনি সাধারণত সাইকেলে করেই যাতায়াত করতেন। তিনি বলেন, ‘‘সাড়ে ৯টা নাগাদ থানা থেকে ফোনে জানানো হয় দাদাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একটি দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’’ এ দিকে, একটি দুধের ক্যান বোঝাই মালবাহী গাড়ি কী করে পরপর দুর্ঘটনা ঘটাল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রত্নাদেবীও। তবে প্রত্যক্ষদর্শী অটোচালকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের দেখে মনে হয়েছে ওই চালকের চোখ বুজে এসেছিল ঘুমে। তবে তাঁদের বক্তব্য, দুর্ঘটনার সময়ে কোনও ভাবে অটোয় যাত্রী থাকলে আরও অনেক প্রাণ হারানোর আশঙ্কা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন