বিস্ময়ে ভরা নতুন গ্যালারি।
বিদ্যুৎ ছাড়া জীবন অচল। অথচ বিদ্যুতকে নিয়ে রয়েছে নানা ভয় এবং ভুল ধারণা। সেই সব ভয় কাটাতে আর বিদ্যুতের নানা মজার দিক তুলে ধরতে ‘বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়াম’-এর (বিআইটিএম) নবতম সংযোজন বৈদ্যুতিক গ্যালারি।
বিদ্যুতের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বিস্ময়কে তুলে ধরতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে গ্যালারিটি, জানালেন বিআইটিএম-এর টেকনিক্যাল অফিসার গৌতম শীল।
গ্যালারিতে ঢুকেই চোখে পড়বে প্রকৃতিতে কী ভাবে তৈরি হয় বিদ্যুৎ, ক্ল্যাসিকাল এক্সপেরিমেন্টস, চুম্বকত্ব ও বিদ্যুতের মতো নানা বিষয় নিয়ে মডেল। যে কেউ হাতেনাতে পরীক্ষা করে জেনে নিতে পারবেন বিদ্যুতের নানা দিক। রান্নাঘরে ব্যবহৃত নানা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে মাল্টিমিডিয়া কিয়স্ক— কী ভাবে নানা কাজে বিদ্যুতের ব্যবহারিক প্রয়োগ হচ্ছে তাও দেখতে পারবেন।
তবে গ্যালারির অন্যতম আকর্ষণ হাই ভোল্টেজ থিয়েটার বা স্পার্ক থিয়েটার। প্রবেশ পথের দু’পাশে রয়েছে দু’টি নিয়ন টাওয়ার। এই স্পার্ক থিয়েটারে উচ্চভোল্টেজ এবং স্থির তড়িৎ নিয়ে রয়েছে নানা মডেল, এক্সপেরিমেন্ট আর বিশেষ শো। যেমন হ্যান্ডেগ্রাফ জেনারেটর-এ কয়েক লক্ষ ভোল্ট তৈরি করে। এর সামনে একটি ইনসুলেটেড টুলের উপর দাঁড়ালে মাথার চুল খাড়া হয়ে যাবে। আবার এর কাছে নিওন টিউব আনলে তা জ্বলে উঠবে। এখানেই রয়েছে উইমহার্ফট। যে কেউ হাতল ঘোরালেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। এ ছাড়াও রয়েছে টেস্টা কয়েল, প্লাজমা গ্লোব, স্পার্ক উইল-ও। গ্যালারি ঘুরে দেখাতে দেখাতে দেখাতে এমনই বলছিলেন, বিআইটিএম-এর সিনিয়র কিউরেটর আবদুল্লা মণ্ডল।
সদ্য তৈরি হওয়া এই গ্যালারি প্রসঙ্গে বিআইটিএম-এর ডিরেক্টর ইমদাদুল ইসলাম বললেন, ‘‘গ্যালারিতে তুলে ধরা হয়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার, উৎপাদন, সরবরাহ এবং স্থির তড়িৎ এবং প্রবাহ তড়িৎ নিয়ে নানা এক্সপেরিমেন্টাল মডেল। ছোটদের মনে বিদ্যুৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকে। সেই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা হয়েছে এখানে।’’ তিনি জানান, এখানে বিদ্যুৎ নিয়ে নানা পরীক্ষা করা যাবে যা সচরাচর স্কুলের ল্যাবরেটরিতে করা সম্ভব নয়। কারণ এগুলি অত্যন্ত ব্যয় সাপেক্ষ। যেমন, কোনও বস্তুতে স্থির তড়িৎ তৈরি হলে তার আশেপাশে যে ‘ফিল্ড’ তৈরি হয় তা স্কুলে পরীক্ষা করে দেখানো সম্ভব নয়। এখানে সেটা দেখা সম্ভব। গ্যালারিটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৭০থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা।
এ গ্যালারির অন্যতম আকর্ষণ সিইএসসি-র বিদ্যুৎ পরিবহণের লেআউট মডেল। কী ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরে তা কলকাতার ঘরে ঘরে পৌঁছয় তা এখানে দেখানো হয়েছে।
এ সবের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুতের অপচয় রোধ সম্পর্কে নানা তথ্য দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে গ্যালারিটি সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।