কলকাতা হাইকোর্টের দুই ভবনের যোগাযোগ এ বার চলমান পথে

কলকাতা হাইকোর্টে আজ, শুক্রবার চালু হচ্ছে চলমান পথ। দৈর্ঘ্যের নিরিখে বিমানবন্দরের পরেই এই ট্রাভেলটর। তবে, একসঙ্গে এসক্যালেটর-ট্রাভেলটর এই প্রথম। ভারতের প্রাচীনতম হাইকোর্ট কলকাতায় স্থাপিত হয় ১৮৬২ সালের ১ জুলাই। বেলজিয়ামের ইপ্রেসের ঐতিহ্যপূর্ণ ‘ক্লথ হল’-এর অনুকরণে এটি তৈরি করেন ওয়াল্টার গ্র্যানভিল। পরবর্তীকালে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া ‘ক্লথ হল’-এর পুনর্নির্মাণে গ্র্যানভিলের নকশার সাহায্য নেওয়া হয়।

Advertisement

অশোক সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৫ ০০:২৭
Share:

চালু হওয়ার অপেক্ষায় ট্রাভেলটর। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

কলকাতা হাইকোর্টে আজ, শুক্রবার চালু হচ্ছে চলমান পথ। দৈর্ঘ্যের নিরিখে বিমানবন্দরের পরেই এই ট্রাভেলটর। তবে, একসঙ্গে এসক্যালেটর-ট্রাভেলটর এই প্রথম।

Advertisement

ভারতের প্রাচীনতম হাইকোর্ট কলকাতায় স্থাপিত হয় ১৮৬২ সালের ১ জুলাই। বেলজিয়ামের ইপ্রেসের ঐতিহ্যপূর্ণ ‘ক্লথ হল’-এর অনুকরণে এটি তৈরি করেন ওয়াল্টার গ্র্যানভিল। পরবর্তীকালে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া ‘ক্লথ হল’-এর পুনর্নির্মাণে গ্র্যানভিলের নকশার সাহায্য নেওয়া হয়।

মামলার সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাইকোর্টের শতবর্ষ পূর্তিতে মূল ভবনের কাছে একটি এবং ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অন্য একটি ভবন তৈরি হয়। কিন্তু যাতায়াতের সমস্যার জন্য পরে তৈরি হওয়া ভবনটির কিছু ঘর ব্যবহার করা যাচ্ছিল না। আপাতত ঠিক হয়েছে, কয়েকটি প্রশাসনিক দফতর শতবর্ষ ভবন থেকে দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষে তৈরি হওয়া ভবনটিতে সরানো হবে। পূর্ত দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘হাইকোর্টে মহিলা এবং বয়স্ক বিচারপতি, আইনজীবী ও অভিযোগকারী— তিনের সংখ্যাই আগের চেয়ে বেড়েছে। মূলত তাঁদের যাতায়াতের সুবিধার কথা ভেবেই ট্রাভেলটর বসানোর সিদ্ধান্ত হয়।’’

Advertisement

হাইকোর্টের মূল ভবনের সামনে থেকে একটি এসক্যালেটর উঠছে প্রায় সাড়ে ছ’মিটার। এর পরে টানা প্রায় ৩৯ মিটার দীর্ঘ ট্রাভেলটর এবং চার ফুট হাঁটাপথ গিয়ে মিশেছে শতবর্ষ ভবনে। যাতায়াতের জন্য আছে পাশাপাশি দু’টি পথ। প্রতিটি সাড়ে চার ফুট চওড়া। মাঝে রেলিং। ট্রাভেলটর তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা। এ শহরে বিমানবন্দর এবং শপিং মলে যে ট্রাভেলটর আছে, সেগুলি সবই ভিতরে। কিন্তু হাইকোর্টের ট্রাভেলটরটি বাইরে। হাইকোর্টের তিন ভবনের মধ্যে যোগাযোগের পথ আরও সুগম করতে দ্বিতীয় একটি ট্রাভেলটর তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

এই ট্রাভেলটর তৈরির জন্য হাইকোর্টের ‘বি’ গেটের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ দশকের প্রাচীন একটি পাকুড় গাছ কাটার প্রয়োজন হয়েছিল। তবে সেটিকে না কেটে ইডেন উদ্যানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

কাজের সুবিধার জন্য হাইকোর্টের আরও একটি ভবন তৈরির পরিকল্পনা আছে। ১০ তলা ওই ভবনের প্রতি তলার আয়তন ৬৫০০ বর্গফুট। মোট আয়তন অবশ্য মিলবে ৬১ হাজার বর্গফুটের একটু বেশি। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।

হাইকোর্টে আসা গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলেও সমস্যা বাড়ছে। বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন এই সমস্যা তীব্রতর হয়। তখন টাউন হলের সামনে এবং কিরণশঙ্কর রায় রোডে তৈরি হয় তীব্র জট। এই সমস্যা মেটাতে ভূগর্ভে একটি দ্বিতল পার্কিং স্পেস তৈরির ভাবনা রয়েছে। ওই পার্কিং স্পেসে দু’টি তল মিলিয়ে প্রায় ৫০০-র উপরে গাড়ি রাখা যাবে। পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার অবশ্য জানান, সদ্য তৈরি এবং প্রস্তাবিত ট্রাভেলটরের জন্য ভূগর্ভের ওই দ্বিতল পার্কিং স্পেস বাতিলও হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন