Tree Plantation

ঘোষণার ১০ বছর পরেও শহরে গাছ-সুমারি চলছে! প্রশ্নে সমন্বয়

২০১৬ সাল থেকে ভারতে প্রায় ৯০ কোটি চারাগাছ রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু তার কত ভাগ কলকাতায় বসেছে, সে সম্পর্কে কোনও তথ্য কলকাতা পুরসভা বা রাজ্য সরকারের কাছে নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:১০
Share:

ছায়াশীতল: চারপাশে বহুতলের মধ্যে একটি মাত্র গাছের তলায় আশ্রয়। নিউ টাউনে।  ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

ঘোষণার পরে এক দশক কেটে গিয়েছে! তবু কলকাতার গাছ-সুমারির কাজ সম্পূর্ণ হল না। এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার ‘বিশ্ব ধরিত্রী দিবস’-এর (আর্থ ডে) উদ্‌যাপন।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ‘বিশ্ব ধরিত্রী দিবস’-এর ‘ক্যানোপি প্রজেক্ট’-এ চারা রোপণের জন্য সবাইকে উৎসাহিত করা হয়। ‘আর্থ ডে অর্গানাইজ়েশন’-এর তথ্য বলছে, ২০১৬ সাল থেকে ভারতে প্রায় ৯০ কোটি চারাগাছ রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু তার কত ভাগ কলকাতায় বসেছে, সে সম্পর্কে কোনও তথ্য কলকাতা পুরসভা বা রাজ্য সরকারের কাছে নেই। অথচ কলকাতায় গাছ-সুমারি করা হবে, সে কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা-ও সেই ২০১২ সালে। রাজ্য বন দফতরের সহযোগিতায় এসেই সুমারির দায়িত্বে ছিল কলকাতা পুরসভা।

তার পর সেই কাজ কত দূর? শুক্রবার রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘খুব দ্রুত এই কাজ শুরু হবে। আমাদের ভাবনাচিন্তার মধ্যে রয়েছে। এই মুহূর্তে গরমে প্রাণীরা যে ভাবে হাঁসফাঁস করছে, তাদের স্বস্তি দেওয়াটাই অগ্রাধিকার। গরম কমলে গাছ-সুমারির নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানাচ্ছেন, শহরে গাছ-সুমারির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দু’টি বরোয় ইতিমধ্যেই সেই কাজ সম্পূর্ণ। তাঁর কথায়, ‘‘ছ’মাস আগে দু’টি বরোয় গাছ-সুমারি শেষ হয়েছে। এই মুহূর্তে অন্য দু’টি বরোয় এই কাজ চলছে।’’ বন দফতরের সহযোগিতার বিষয়ে মেয়র পারিষদ বলেন, ‘‘কাজটা কলকাতা পুরসভা নিজেই করছে।’’

Advertisement

যার প্রেক্ষিতে পরিবেশকর্মীদের মত, বন দফতর ও কলকাতা পুরসভার দু’রকম মন্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে বিভাগীয় সমন্বয়ের অভাব। তাঁদের একাংশ আরও বলছেন, গাছ-সুমারির কাজ এত দিনে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তা হল না কেন? যেখানে শাসকদলের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে কলকাতায় গাছ-সুমারি শুরু হতে চলেছে বলা হয়েছে। এ-ও বলা হয়েছে, কলকাতা পুরসভাকে এ ব্যাপারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সাহায্য করবে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিভাগীয় প্রধান রীতা কুণ্ডু বলেন, ‘‘এ রকম কোনও খবর আমি অন্তত জানি না। গত সেপ্টেম্বর থেকে আমি বিভাগীয় প্রধান হয়েছি। এই সময়সীমার মধ্যে গাছ-সুমারির ব্যাপারে আমাদের সাহায্য চেয়ে কলকাতা পুরসভার কাছ থেকে কোনও চিঠি পাইনি। তবে এই কাজ করা হলে তা খুবই ভাল।’’ আর এ দিকে দেবাশিস কুমার বলছেন, ‘‘এক বছর হল গাছ-সুমারির কাজ আমরা শুরু করেছি।’’

ঘটনাপ্রবাহ যা দাঁড়াচ্ছে তা হল, কলকাতা পুরসভার দাবি অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার ১০ বছর পরে গাছ-সুমারির কাজ কলকাতায় শুরু হয়েছে, কিন্তু কবে তা শেষ হবে, সেই উত্তর নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন