Belgachia Veterinary Hospital

পশু হাসপাতালে এখনও বন্ধ পরিষেবা, ভোগান্তি চিকিৎসা না পেয়ে

জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগে কমবেশি ১৫০টি পশুর চিকিৎসা হত। শুধু বেলগাছিয়া বা সংলগ্ন অঞ্চল নয়, দূরের বিভিন্ন জেলা থেকেও সেখানে পোষ্যদের নিয়ে আসতেন অভিভাবকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪৪
Share:

চূড়ান্ত ভোগান্তিতে হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল পশু ও তাদের অভিভাবকেরা। —ফাইল চিত্র।

প্রায় দু’সপ্তাহ পরেও স্বাভাবিক হল না বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালের বহির্বিভাগ পরিষেবা। চূড়ান্ত ভোগান্তিতে ওই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল পশু ও তাদের অভিভাবকেরা। দূর-দূরান্ত থেকে অসুস্থ পশুদের নিয়ে ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে ভিড় করছেন অনেকে। কিন্তু কোনও রকম চিকিৎসা না পেয়েই তাঁদের ফিরে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। আন্দোলনের নামে দিনের পর দিন চিকিৎসার মতো জরুরি পরিষেবা বন্ধ করে রাখা যায় কি না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। কর্তৃপক্ষ যদিও আলোচনার মাধ্যমে জট খোলার চেষ্টা চলছে বলে দাবি করেছেন।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের আন্দোলনের জেরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালের বহির্বিভাগ। কর্তৃপক্ষের তরফে বার বার আন্দোলনরত অধ্যাপকদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হলেও সেই জট কাটেনি। ‘নন-প্র্যাক্টিসিং অ্যালাওয়েন্স’ (এনপিএ) পুনরায় মূল বেতনের অংশ হিসাবে গণ্য না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন বলে জানিয়েছেন। আর এই আন্দোলনের জেরে বহির্বিভাগ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে অসংখ্য মানুষের। অসুস্থ পোষ্যদের নিয়ে তাঁরা কোথায় যাবেন, বুঝতে পারছেন না।

জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগে কমবেশি ১৫০টি পশুর চিকিৎসা হত। শুধু বেলগাছিয়া বা সংলগ্ন অঞ্চল নয়, দূরের বিভিন্ন জেলা থেকেও সেখানে পোষ্যদের নিয়ে আসতেন অভিভাবকেরা। কিন্তু অথৈ জলে পড়েছেন তাঁরা। আদরের পিট্টুর সপ্তাহখানেক ধরে জ্বর। তাকে নিয়ে ওই পশু হাসপাতালে এসেছিলেন বারাসতের বাসিন্দা অভীক মজুমদার। চিকিৎসা করাতে না পেরে পোষ্যটিকে জড়িয়ে গাড়ির মধ্যেই বসে ছিলেন ওই যুবক। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও সুস্থ সমাজে চিকিৎসার মতো পরিষেবা
বন্ধ রেখে আন্দোলন করা যায়? আন্দোলন চলুক, কিন্তু তা বলে পরিষেবা বন্ধ থাকবে কেন? কেউ কি দেখার নেই?’’ চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠনও। এমনকি, প্রতিবাদে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে। এমনই এক জন পশুপ্রেমী ঝর্না মণ্ডল বললেন, ‘‘গত রবিবার আমরা হাসপাতালের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাই। স্মারকলিপিও দেব বলে কর্তৃপক্ষের সময় চেয়েছি। দিনের পর দিন এ ভাবে চলতে পারে না।’’

Advertisement

আন্দোলনরত অধ্যাপকেরা বহির্বিভাগ বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে নিলেও জরুরি ভিত্তিতে
পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন। এক অধ্যাপকের কথায়, ‘‘বহির্বিভাগ বন্ধ থাকলেও যে সমস্ত পোষ্যের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দরকার, তাদের পরিষেবা দিচ্ছি।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শ্যামসুন্দর দানা বলেন, ‘‘চিকিৎসা পরিষেবা পুনরায় চালু করতে আমরা অধ্যাপকদের সঙ্গে আলোচনায় বসছি। এর আগেও বার বার আবেদন করেছি। আশা করছি, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন