গাড়ির জটে ত্রাহি রব স্কুল তল্লাটে

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ০১:১৯
Share:

অবরুদ্ধ: এ ভাবেই আটকে থাকে পথ চলা। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের মূল গেট থেকে বেরিয়ে বাঁ দিকে কয়েক হাতের মধ্যেই বিশাল গাছটি। তা থেকেই নেতাজিনগরের ওই এলাকার নাম হয়েছে গাছতলা। গাছের নীচ থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রোড পর্যন্ত সার দিয়ে তিনটি স্ট্যান্ডের অটো। উল্টো দিকও স্ট্যান্ডে ফেরা অটোর দখলে। সঙ্গে যুক্ত হয় অভিভাবকদের গাড়ি এবং স্কুলগাড়ির জট।

Advertisement

সব মিলিয়ে অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চ স্কুলের সামনের রাস্তার ছবি সকাল-বিকেল এমনই থাকে বলে অভিযোগ। অভিভাবকদের দাবি, যে কোনও সময়ে বড় অঘটন ঘটার আশঙ্কায় তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষকে বারবার এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘ওই রাস্তায় তিনটি অটো স্ট্যান্ড এবং ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। থাকায় যাতায়াত করা যায় না। মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে যায়।’’ রতন সাঁধুখা নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা আবার দিন কয়েক আগের গড়িয়াহাট এলাকার কর্নফিল্ড রোডে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের কথা মনে করিয়ে বললেন, ‘‘ওই ঘটনার পরেও স্কুলগুলি সতর্ক হয়নি। আমরাও প্রয়োজনে বিক্ষোভের পথে যাব। বিক্ষোভ না হলে দেখছি এখন কিছুই হয় না।’’

গত এপ্রিলে কর্নফিল্ড রোডের বাসিন্দাদের একাংশ রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান। সাউথ পয়েন্ট স্কুলে আসা স্কুলগাড়ির দাপটে তাঁরা এলাকায় থাকতে পারছেন না বলে দাবি করেন। সেই সময়ে শহরের অন্যান্য স্কুল চত্বর ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সর্বত্রই গাড়ির জটের চিত্রটা একই রকম। কোথাও স্কুলের গাড়ির জটে সামনের হাসপাতালে ঢোকার মুখে আটকে পড়ছে অ্যাম্বুল্যান্স। কোথাও স্কুলগাড়ির দাপটে দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকছে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা।

Advertisement

বুধবার সকালে নেতাজিনগরের অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চ স্কুলের সামনে গিয়ে দেখা গেল, গাড়ির জটে পথ চলাই দায়। গাছতলা থেকে আমবাগান, পূর্ব আনন্দপল্লি এবং দীনেশনগর নিবেদিতা পার্ক পর্যন্ত তিনটি রুটে অটো যায়। সব ক’টির স্ট্যান্ডই স্কুল ভবন লাগোয়া। স্কুল ছুটির সময়ে স্কুলগাড়ি এবং অভিভাবকদের গাড়ির ফাঁক দিয়েই আঁকাবাঁকা ভাবে অটোর বেপরোয়া যাত্রা শুরু হল। কোনও অন্যমনস্ক পড়ুয়াকে বারবার হর্ন দিয়ে সরিয়ে রাস্তা করে নিলেন অটোচালক। বেপরোয়া কয়েক জন অটোচালক তর্ক জুড়লেন অভিভাবকদের সঙ্গে।

বিষয়টি নিয়ে অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চের অধ্যক্ষ কাজরী বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়ে অটোচালকদের সঙ্গে কথা বলেছি। পুলিশকেও জানিয়েছি। কিন্তু অটো তো তুলে দিতে বলা যায় না।’’ তাঁর দাবি, সেই বৈঠকে অটোচালকেরা আশ্বাস দিয়েছেন, দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে দিকে তাঁরা নজর রাখবেন। তবে অভিভাবকদের দিক থেকেও কিছু গাফিলতি থাকে বলে কাজরীদেবীর দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও অভিভাবক রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিলেবাস দেখছেন, কেউ আবার বাচ্চাদের ছেড়ে দিয়েও স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। ফলে সমস্যা তো হবেই।’’

রিজেন্ট পার্ক থানার অন্তর্গত ওই এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মী জানালেন, গড়িয়াহাটের ঘটনার পরে ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা শোনা হয়েছে। স্কুলের সময়ে বাড়তি পুলিশকর্মীও রাখা হচ্ছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, ‘‘আমাদের সঙ্গে কথা বলার পরেও তো পুলিশ রাস্তার জট কাটাতে পারল না। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তখন ক্ষোভ সামাল দেওয়া যাবে তো!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন