মূক ও বধিরের ঠিকানা জানতে সহায় ফেসবুক

তদন্তকারীরা জানান, থানার এক আধিকারিককে মোবাইলে ফেসবুক করতে দেখে ওই প্রতিবন্ধী যুবক ইশারা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০০:৪১
Share:

উদ্ধার: বাবার সঙ্গে রেবকান্ত (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

রাস্তায় একা ঘুরতে দেখে যুবকটিকে উদ্ধার করেছিল টহলদারি পুলিশ। কিন্তু মূক ও বধির হওয়ায় তিনি নিজের নাম কিংবা পরিচয় জানাতে পারেননি। যুবককে তাঁর বাড়িতে ফেরাতে পুলিশ মূক ও বধিরদের ইঙ্গিত বোঝেন এমন ব্যক্তির সাহায্য নেয়। তবে তাতে নাম জানা গেলেও যুবক তাঁর বাড়ির সম্পূর্ণ ঠিকানা বলতে পারেননি। শেষে ওই প্রতিবন্ধী যুবকেরই উপস্থিত বুদ্ধি সিঁথি থানাকে সাহায্য করল।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, থানার এক আধিকারিককে মোবাইলে ফেসবুক করতে দেখে ওই প্রতিবন্ধী যুবক ইশারা করেন। তখন ওই দোভাষীর সাহায্য নিয়ে পুলিশ জানতে পারে মূক ও বধির ওই যুবকেরও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজেই শেষ পর্যন্ত মূক বধির ওই যুবককে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দিল কলকাতা পুলিশ।

তদন্তকারীরা জানান, ওই যুবকের নাম রেবকান্ত নায়েক। অসমের জোড়হাট সদর থানা এলাকার হেমলাইতে বাড়ি বছর ছব্বিশের ওই যুবকের। রবিবার রেবকান্তকে তাঁর বাবার হাতে তুলে দেয় সিঁথি থানার পুলিশ। ওই দিনই ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন বাবা মাংলু নায়েক।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার সিঁথি থানা এলাকার রামলীলা বাগানে রেবকান্তকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে দেখেন পুলিশকর্মীরা। তাঁরা ওই যুবককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। মূক ও বধির হওয়ায় তিনি যখন নাম, ঠিকানা কিছুই বলতে পারছিলেন না, তখন থানার ওসি সৈকত নিয়োগীর পরামর্শে মূক বধিরদের ভাষা বুঝতে পারে এমন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তদন্তকারীরা। ওই দোভাষীর সামনে মূক ও বধির যুবকটি নিজের নাম লিখে জানান রেবকান্ত নায়েক। সেই সঙ্গে তিনি হেমলাই বলে একটি জায়গার নাম লেখেন। এক পুলিশ অফিসার জানান, রেবকান্তের ইঙ্গিত দেখে দোভাষী পুলিশকে জানান যে রেবকান্তের বাবা চা পাতা তোলার কাজ করেন। কিন্তু তাতেও পুরো ঠিকানা মেলেনি। এর পরেই লক্ষ্য করা যায় যুবকটি এক জন পুলিশকর্মীর মোবাইল ফোনের দিকে ইশারা করছেন। ওই কর্মী তখন মোবাইলে ফেসবুক খুলে রেখেছিলেন।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এর পরে দোভাষীর মাধ্যমেই পুলিশ বোঝে রেবকান্তের একটি ফেসবুক প্রোফাইল রয়েছে। সেই প্রোফাইল ঘেঁটে রেবকান্তের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এক বন্ধু পুলিশকে ওই যুবকের সম্বন্ধে বিস্তারিত জানান। সেই সূত্র ধরেই গত শুক্রবার রেবকান্তের বাবা মাংলু নায়েকর সঙ্গে যোগাযোগ করে সিঁথি থানা। রবিবার তিনি থানায় এলে ছেলে বাবাকে দেখে চিনতে পারেন। পরে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান তিনি।

তবে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, অসমের বাসিন্দা শুনে অসম পুলিশের বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে যোগাযোগ করেছিল সিঁথি থানার পুলিশ। কিন্তু সেখান থেকে কোনও সাহায্য করা হয়নি বলে পুলিশের দাবি। তবে জোড়হাট সদর থানায় বৃহস্পতিবারই একটি নিখোঁজের ডায়েরি করা হয়েছিল। অন্য দিকে সিঁথি থানার পুলিশ জানতে পেরেছে, রেবকান্ত গত ১৯ জুন বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। প্রথমে তিনি ট্রেনে করে কানপুর চলে গিয়েছিলেন। কী ভাবে তিনি কলকাতায় পৌঁছেছিলেন তা অবশ্য জানতে পারেনি কলকাতা পুলিশ।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন