পাইকপাড়া

ঝগড়ার জেরে শিশুকন্যাকে গঙ্গায় ছুড়ে ফেলে দিল বাবা

ঝগড়াঝাঁটির জেরে নিজের আড়াই মাসের মেয়ের গলা টিপে ধরে তাকে গঙ্গায় ছুড়ে ফেলার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার দুপুরে বালি ব্রিজ থেকে সে মেয়েকে জলে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে বলে নিজেই জানিয়েছে পাইকপাড়ার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি। বুধবার রাত পর্যন্ত গঙ্গায় তল্লাশি চালিয়েও শিশুটির কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। তবে বাবা শেখর শেঠকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৩২
Share:

ঝগড়াঝাঁটির জেরে নিজের আড়াই মাসের মেয়ের গলা টিপে ধরে তাকে গঙ্গায় ছুড়ে ফেলার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার দুপুরে বালি ব্রিজ থেকে সে মেয়েকে জলে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে বলে নিজেই জানিয়েছে পাইকপাড়ার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি। বুধবার রাত পর্যন্ত গঙ্গায় তল্লাশি চালিয়েও শিশুটির কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। তবে বাবা শেখর শেঠকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, চলতি মাসের ৮ নভেম্বর ছাঁট লোহার ব্যবসায়ী শেখর পাইকপাড়ার শহিদ কলোনিতে একটি ঘর ভাড়া নেয়। মিনা বিশ্বাস নামে এক মহিলার সঙ্গে ওই বাড়িতে বসবাস করছিল সে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, তাঁরা বিবাহিত নন। তবে ঘরটি ভাড়া নিয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়েই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মিনাদেবী হোটেলে গান করেন। বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে তাঁর। ওই মহিলার আগের পক্ষের একটি সন্তানও আছে। অবিবাহিত শেখরের সঙ্গে থাকাকালীন সম্প্রতি তাঁদের একটি মেয়ে হয়। এই নিয়েই সন্দেহের বশে গোলমালের সূত্রপাত। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, গত কয়েক দিনে সেই গোলমাল চরমে ওঠে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে শেখর মীনাদেবী ও তাঁদের শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যায়। রাত ১১টা নাগাদ বাড়ি ফেরেন মিনাদেবী একাই। তার পরে কাঁদতে কাঁদতে পড়শিদের তিনি জানান, শেখর তাঁকে মারধর করে মেয়েকে কেড়ে নিয়ে গঙ্গার জলে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে।

পড়শিরা পুলিশকে জানাতে বললে রাতেই চিত্‌পুর থানায় শেখরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মিনাদেবী। পুলিশ মানিকতলায় শেখরের নিজস্ব বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে আনে। পুলিশকর্তাদের দাবি, ধৃতকে জেরা করে জানা গিয়েছে, পারিবারিক কোনও বিষয় নিয়ে গোলমাল এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে, মাত্র আড়াই মাসের মেয়ের গলা টিপে ধরে শেখর। তার পরে এমন ভাবে মীনাদেবীকে মারধর করে যে, তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এর পরেই শিশুকন্যাটিকে নিয়ে শেখর বাইরে বেরিয়ে যায়। ইতিমধ্যে জ্ঞান ফিরলে মিনাদেবীও তার পিছু নেন। রাস্তায় দু’জনের মধ্যে আর এক দফা মারপিট হওয়ার পরে শেখর মেয়েকে বালি ব্রিজ থেকে গঙ্গায় ফেলে দেয় বলে অভিযোগ।

কিন্তু যতই গোলমাল হোক, এতটুকু মেয়েকে গঙ্গায় ফেলে দেওয়ার কারণ কী, তা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না পড়শিরা কেউই।

উত্তেজনা কোন পর্যায়ে পৌঁছলে এমন কাণ্ড ঘটানো সম্ভব? মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল বলেন, “ওদের মধ্যে মা-বাবা হওয়ার মতো পরিণত মননের কোনও চিহ্ন নেই। মন শিক্ষিত বা সুস্থ নয়। সন্তানের দায়িত্ব খারিজ করতেই ওই ব্যক্তি এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে মনে হয়।”

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “বিষয়টি খুবই অমানবিক। তবে জেরায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বলতে পারি, এটা নিজেদের মধ্যে কলহের পরিণতি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন