Durga Puja 2023

বৃষ্টিতে মণ্ডপের কাজ বন্ধ বহু পুজোর, বাজেট বৃদ্ধির আশঙ্কা

টানা বৃষ্টিতে মাঠে কাদা জমে যাওয়ায় মণ্ডপের বাইরের অংশে কাজ করা যাচ্ছে না দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের পুজোয়। তাই আপাতত বাইরের কাজ বন্ধ রেখে ভিতরের কাজ শেষ করায় জোর দিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৬
Share:

কর্দমাক্ত: বৃষ্টিতে মাঠে জল জমায় থমকে পুজো মণ্ডপ তৈরির কাজ। বৃহস্পতিবার, দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে। ছবি: সুমন বল্লভ।

ঢাকে কাঠি পড়তে বাকি আর মেরেকেটে মাসখানেক। অন্যান্য বছর এই সময়ে তুঙ্গে থাকে মণ্ডপ তৈরির ব্যস্ততা। এ বার অবশ্য কুমোরটুলির মহিষাসুর মণ্ডপে পৌঁছনোর আগেই ময়দানে নেমে পড়েছে অসুররূপী বৃষ্টি। তাই কাজ চলছে একেবারে ঢিমেতালে। কোনও পুজো কমিটি মাঠ শুকোনোর অপেক্ষা করছে। কোথাও আবার চিন্তা, পুজোতেও টানা বৃষ্টি হলে মণ্ডপে জল ঢুকে যাবে না তো? এ হেন আবহাওয়ার
কারণে সময়ে কাজ শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তার পাশাপাশি বাজেট বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।

Advertisement

খাতায়-কলমে পুজোর মাসখানেক বাকি থাকলেও আজকাল মহালয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় উদ্‌যাপন। অধিকাংশ পুজোরও তাড়াতাড়ি উদ্বোধন হয়ে যায়। কিন্তু আবহাওয়ার যা পরিস্থিতি, তাতে মহালয়ার মধ্যে মণ্ডপের কাজ শেষ করা নিয়ে সন্দিহান পুজোকর্তাদের অনেকেই। শরতের নীল আকাশের বদলে এখন সারা দিনই কালো মেঘের ঘনঘটা। সেই সঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি। বুধবারের পরে বৃহস্পতিবারও বৃষ্টি হয়েছে শহরে। এমন আবহাওয়ার পরিবর্তন কবে হবে, তা জানাতে পারছে না হাওয়া অফিসও। এ দিকে, টানা বৃষ্টিতে জল-কাদায় ধুয়ে যাচ্ছে মণ্ডপের সাজসজ্জা।

টানা বৃষ্টিতে মাঠে কাদা জমে যাওয়ায় মণ্ডপের বাইরের অংশে কাজ করা যাচ্ছে না দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের পুজোয়। তাই আপাতত বাইরের কাজ বন্ধ রেখে ভিতরের কাজ শেষ করায় জোর দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তাঁদেরই এক জন সুদীপ্ত কুমার বললেন, ‘‘মাঠে পা ফেললেই গোড়ালি ডুবে যাচ্ছে। জল-কাদায় একাকার অবস্থা। এর মধ্যে কাজ হবে কী করে? আর যে ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে তো শিল্পীদেরও বাইরের ভিজে বাঁশে উঠতে দিতে পারি না। আপাতত সব বন্ধ রেখে শুধু ভিতরের কাজ করা চলছে।’’ একটু বৃষ্টি হলেই এলাকায় জল জমে যায়। তাই আবহাওয়া চিন্তা বাড়িয়েছে দমদম পার্ক তরুণ সঙ্ঘের পুজোকর্তাদেরও। বৃষ্টির জেরে বাজেট কিছুটা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন উদ্যোক্তারা। পুজোর সভাপতি রবীন গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘এখনও জল জমেনি, তবে এ নিয়ে একটা চিন্তা তো রয়েইছে। পুজোর দশ দিন আগে কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এখন তো কাজই করা যাচ্ছে না। এখন যা পরিস্থিতি, এর পরে আবহাওয়া ঠিক হলে লোক বাড়িয়ে দিন-রাত কাজ করে সামাল দিতে হবে। তাতে বাজেট বাড়লেও কিছু করার নেই।’’

Advertisement

টানা বৃষ্টিতে কার্যত একই সমস্যা কুমোরটুলি পার্ক, গৌরীবেড়িয়া সর্বজনীন, হাতিবাগান সর্বজনীন-সহ শহরের একাধিক পুজোর। হাতিবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা তথা ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু ব‌ললেন, ‘‘বাইরের কাজ আপাতত সব বন্ধ। কর্মীর সংখ্যাও কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। সকালের দিকে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় সমস্যা আরও বেশি হচ্ছে।’’

সময়ে কাজ শেষ করতে মণ্ডপ চত্বরে বিকল্প ব্যবস্থাও করেছে একাধিক পুজো কমিটি। ত্রিপলের ছাউনি তৈরি করে জোরকদমে কাজ চলছে সুরুচি সঙ্ঘে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা কিংশুক মিত্র বললেন, ‘‘এ বার আমাদের গোটা মণ্ডপ জুড়ে প্রচুর হাতের কাজ রয়েছে। এখন কাজ বন্ধ হলে তা আর শেষই করা যাবে না। তাই ত্রিপল টাঙিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এটা আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছি।’’

বৃষ্টির কথা ভেবে আগে থেকেই গোটা মাঠে ছাউনি দিয়ে কাজ শুরু করেছিল চেতলা অগ্রণী। পুজোর আহ্বায়ক সমীর ঘোষ বললেন, ‘‘প্রতি বারই বৃষ্টির জন্য কাজে
সমস্যা হয়। তাই এ বার আমরা আগেই ঢেকে দিয়েছিলাম। ফলে বৃষ্টি হলেও এখনও পর্যন্ত তেমন সমস্যা হয়নি। শুধু পুজোর ক’দিন বৃষ্টি না হলেই হল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন