সুভাষ সরোবরের জলে মিশছে মল-মূত্র

কেএমডিএ সূত্রের খবর, গত জুলাইয়ে সুভাষ সরোবরে প্রচুর মাছ মারা গিয়েছিল। এর পরেই ৩ সেপ্টেম্বর সেখানকার জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের গবেষণাগারে পাঠিয়েছিলেন কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩১
Share:

দূষণ: সুভাষ সরোবরের জলে মিশছে মল-মূত্র

সুভাষ সরোবরের জলের গুণমান রবীন্দ্র সরোবরের চেয়েও খারাপ! পরীক্ষার ফলাফল বলছে এমনটাই।

Advertisement

কেএমডিএ সূত্রের খবর, গত জুলাইয়ে সুভাষ সরোবরে প্রচুর মাছ মারা গিয়েছিল। এর পরেই ৩ সেপ্টেম্বর সেখানকার জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের গবেষণাগারে পাঠিয়েছিলেন কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি সেই রিপোর্টেই প্রকাশ সুভাষ সরোবরের জলে প্রচুর পরিমাণে কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া পাওয়া গিয়েছে। প্রতি একশো মিলিলিটার জলে কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা চার হাজার এমপিএন (মোস্ট প্রোব্যাবল নাম্বার) পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ ওই জলে মিশছে মল-মূত্র। জলে শ্যাওলা এবং ক্ষারের পরিমাণও বেশি। তবে, দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ভাল বলে জানানো হয়েছে।

এই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ঘুম ভাঙে প্রশাসনের। কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, রাজ্য পরিবেশ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে সুভাষ সরোবর রক্ষায় কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেমন, রবীন্দ্র সরোবরের মতো সুভাষ সরোবরেও স্নান, বাসন ধোয়া, চত্বরে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। সেখানে নিয়মিত জলের নমুনা পরীক্ষা করা হবে। পরিবেশ দফতর ছাড়াও, কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ সুভাষ সরোবর খোলা এবং বন্ধের সময় উল্লেখ করা-সহ আরও কিছু প্রশাসনিক নির্দেশ দেবে। পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হবে নিরাপত্তার উপরেও।

Advertisement

পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, ছটের আগেই যখন এমন পরিস্থিতি। সে ক্ষেত্রে ছটের পরে যে জলের মান আরও খারাপ হবে, তা জানা কথা। এই আশঙ্কা থেকে ছট পরবর্তী জল পরীক্ষা কেন করা হল না? উঠছে সেই প্রশ্নও। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, ছটের পরে সুভাষ সরোবরের জল নিয়ে কোনও অভিযোগ না ওঠায় নমুনা পরীক্ষা হয়নি। তা ছাড়া রবীন্দ্র সরোবরে জলের মান পরীক্ষার যে ব্যবস্থা রয়েছে, এখানে তা নেই।

এই প্রসঙ্গে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরের পরিবেশ রক্ষা যতটা প্রয়োজন, ততটাই জরুরি সুভাষ সরোবরের। এই জলাশয় বাঁচাতে নমুনা পরীক্ষা ছাড়াও পরিবেশের সার্বিক উন্নয়ন দরকার। কারণ, রবীন্দ্র সরোবরের চেয়ে সুভাষ সরোবরের সামগ্রিক অবস্থা বর্তমানে অনেকটাই খারাপ।’’

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক পুনর্বসু চৌধুরী বলেন, ‘‘সুভাষ সরোবরে জলের রিপোর্ট থেকে প্রমাণিত যে বাইরের বর্জ্য জলাশয়ে পড়ছে। সে কারণে ওখানে শ্যাওলার আধিক্য রয়েছে। জলে সাবান জাতীয় বস্তু ব্যবহারেরও প্রমাণ মিলেছে। দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ভাল হলেও শ্যাওলা বাড়তে থাকলে সমস্যা বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন