Crime

রুপোর দোকানে শুল্ক আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে লুট 

স্থানীয় সূত্রের খবর, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তিন জনকে দেখা গেলেও রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:২৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

শুল্ক আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে একটি রুপোর দোকানে লুটের অভিযোগ উঠল। শনিবার সন্ধ্যায়, গরানহাটার ১০ নম্বর যদু পণ্ডিত রোডের এই ঘটনায় রাতের দিকে বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সব মিলিয়ে পাঁচ লক্ষেরও বেশি মূল্যের রুপো এবং নগদ এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রের খবর, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তিন জনকে দেখা গেলেও রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁদের একাংশের দাবি, গরানহাটার গয়না ব্যবসায়ীদের কথা ভেবে কিছু দিন আগে সেখানে পুলিশের তরফে সিসি ক্যামেরা লাগানো হলেও কোনও অজ্ঞাতকারণে সেগুলি খুলে নেওয়া হয়েছে। এর পরে স্থানীয় থানায় এবং কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে ই-মেল করে অনুরোধ করা হলেও এলাকায় সিসি ক্যামেরা ফেরেনি।

Advertisement

গরানহাটার ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘উত্তর কলিকাতা ব্যবসায়ী সমিতি’-র সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ধর জানান, গরানহাটার যেখানে লুটের ঘটনা ঘটেছে, সেটির নাম গণেশ
ল্যাবরেটরি। মূলত রুপো গলিয়ে গয়না তৈরির কাজ হয় সেখানে। ওই দোকানের মালিক গণেশ চৌহান বেরিয়ে যান সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ। এর পরেই সেখানে হাজির হন তিন ব্যক্তি। তাঁরা নিজেদের শুল্ক আধিকারিক বলে পরিচয় দেন। ওই সময়ে দোকানে তিন কর্মী কাজ করছিলেন। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘আমাদের বলা হয়, এখানে বেআইনি কাজ চলছে বলে শুল্ক দফতরে খবর গিয়েছে। আমরা মালিককে ফোনে ধরিয়ে দিতে চাইলেও তাঁরা কথা বলতে চাননি। এর পরে ‘তাড়াতাড়ি বার কর কী আছে’ বলে চাপ দিতে শুরু করেন। ভয়ে আলমারি খুলে দিই আমরা। এর পরে আলমারিতে থাকা প্রায় সাত কেজি ওজনেরও বেশি রুপো নিয়ে ব্যাগে ভরে ওরা। সেগুলি নাকি সব বেআইনি। আলমারিতে থাকা প্রায় এক লক্ষ টাকাও ব্যাগে ভরে নেওয়া হয়।’’ দোকানের মালিক গণেশ বলেন, ‘‘যাওয়ার আগে তদন্তের জন্য লাগবে বলে আমার তিন কর্মীর মোবাইলও নিয়ে নেওয়া হয়। নেওয়া হয়েছে দু’জনের আধার কার্ডও। সবটাই ঘটেছে মিনিট পনেরোর মধ্যে!’’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে বড়তলা থানা সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কয়েকটি দোকানের সামনে লাগানো সিসি ক্যামেরায় তিন জনকে দেখা গিয়েছে। তাদের চিহ্নিত করে পাকড়াও করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু রবিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ওই এলাকার গয়নার ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা অভিজিৎ বলেন, ‘‘শুল্ক অফিসারের পরিচয়ে এই ভাবে লুটের বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে সাম্প্রতিক অতীতে। কিছু দিন আগেই আবার সোনার দোকানে ডাকাতির পরে এ নিয়ে প্রবল আলোচনা হয়েছে। পুলিশের তরফে এ ব্যাপারে গয়নার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকও করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলও একটি বৈঠকে ব্যবসায়ীদের ডেকে কথা বলেছিলেন। কিন্তু তার পরে বার বার বলা সত্ত্বেও গরানহাটার এই এলাকার নিরাপত্তা বাড়েনি। সব সময়ে পুলিশ বা সিভিক কর্মী রাখা হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু আগে যেমন সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিল, সে রকমটাই আবার করা হোক। এতে অপরাধ অনেকটা কমিয়ে ফেলা যাবে মনে হয়।’’

Advertisement

সিসি ক্যামেরা প্রসঙ্গে বড়তলা থানার আধিকারিকদের দাবি, ‘‘যে সমস্ত এলাকায় দ্রুত প্রয়োজন, আগে সেখানেই ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। এই চত্বরের ব্যবসায়ীদেরই ক্যামেরা লাগানোর ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। অনেকে নিজেরাই লাগিয়েছেন। পুলিশের তরফে কেন্দ্রীয় ভাবে কী করা যায়, দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন