টোটোয় বসা নিয়ে বচসার জেরে মৃত্যু 

প্রত্যক্ষদর্শীরা ও টোটোচালক পুলিশকে জানিয়েছেন, টোটো থেকে নেমে ফের বচসা বেধে যায় চিত্তরঞ্জনবাবু এবং ওই যুবকের মধ্যে। অভিযোগ, তখনই হাতাহাতি শুরু হতে ওই যুবক এলোপাথাড়ি চড়, ঘুসি মারতে শুরু করেন ওই প্রৌঢ়কে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০৩
Share:

চিত্তরঞ্জন সরকার

টোটোয় বসাকে কেন্দ্র করে বচসা বেধেছিল এক যুবক ও এক প্রৌঢ়ের মধ্যে। এমনকি, গন্তব্যে পৌঁছে টোটো থেকে নেমেও দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। অভিযোগ, আচমকাই ওই যুবকের ঘুষির আঘাতে মাটিতে পড়ে যান ওই প্রৌঢ়। এর পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বিরাটি সেতুর নীচে। পুলিশ জানায়, ঘটনার পরে ওই প্রৌঢ়কে তুলতে সকলে ব্যস্ত থাকার সুযোগে চম্পট দেন ওই যুবক। তবে এলাকার সিসি ক্যামেরা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে ওই অপরিচিত যুবকের চেহারার বর্ণনা পাওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানায়, ওই প্রৌঢ়ের নাম চিত্তরঞ্জন সরকার (৫১)।

পুলিশ সূত্রের খবর, দত্তপুকুরের কদম্বগাছির হেমন্ত বসু নগরের বাসিন্দা চিত্তরঞ্জনবাবু এ দিন বিরাটির শ্রীনগর থেকে টোটোয় উঠেছিলেন বিরাটি স্টেশন যাবেন বলে। তাঁর সঙ্গেই উঠেছিলেন ওই যুবক। সেই সময় হাল্কা বৃষ্টি পড়ছিল। তার জেরে টোটোর আসন ভিজে ছিল। আর তাই টোটোর আসনে বসা নিয়েই চিত্তরঞ্জনবাবুর সঙ্গে বচসা বাধে ওই যুবকের। দু’জনের মধ্যে বচসা বাধলে, টোটো চালক শঙ্কর সাহা তাঁদের থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি। এর পরে বিরাটি সেতুর কাছে টোটো পৌঁছলে দু’জনেই নেমে পড়েন।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীরা ও টোটোচালক পুলিশকে জানিয়েছেন, টোটো থেকে নেমে ফের বচসা বেধে যায় চিত্তরঞ্জনবাবু এবং ওই যুবকের মধ্যে। অভিযোগ, তখনই হাতাহাতি শুরু হতে ওই যুবক এলোপাথাড়ি চড়, ঘুসি মারতে শুরু করেন ওই প্রৌঢ়কে। স্থানীয়েরা থামাতে এগিয়ে আসতে আসতেই ওই যুবকের ঘুষিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন চিত্তরঞ্জনবাবু। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পথচারী ও স্থানীয়েরা ওই প্রৌঢ়কে শুশ্রূষা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ার মাঝেই চম্পট দেয় ওই যুবক। এর পরে স্থানীয়েরা চিত্তরঞ্জনবাবুকে কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকদের অনুমান, বুকে ও পেটে সজোরে আঘাত লেগেই মৃত্যু হয়েছে ওই প্রৌঢ়ের।

মঙ্গলবার সাগর দত্ত হাসপাতালের মর্গে চিত্তরঞ্জনবাবুর ময়না-তদন্ত করা হয়। সেখানে এসে ওই প্রৌঢ়ের ছেলে বাপি সরকার বলেন, ‘‘সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ পুলিশের থেকে ফোন পেয়ে জানতে পারি ঘটনাটি। আমরা ওই অপরিচিত যুবকের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি।’’ বাপি জানান, বালিঘাট এলাকায় একটি ছোট ব্যবসা রয়েছে তাঁর বাবার। তিনি বাড়ি তৈরির ঢালাই মেশিন, মিস্ত্রি সরবরাহ করতেন।

প্রতিদিনের মতো ওই দিনও সকাল ৬টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গীরা জানিয়েছেন, ওই দিন চিত্তরঞ্জনবাবু কলকাতায় গিয়েছিলেন কিছু যন্ত্রাংশ কিনতে। কেনাকাটার পরে বাসে চেপে তিনি দুর্গানগরে এসে নামেন। সেখান থেকে শ্রীনগর গিয়ে টোটোতে চেপেছিলেন বিরাটি স্টেশন যাবেন বলে। বাপি জানান, অনেক সময় বারাসতে নেমে বাসে চেপে বাড়ি ফিরতেন চিত্তরঞ্জনবাবু। প্রতিদিনই সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ফিরে আসতেন।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ওই অপরিচিত যুবককে আগে কখনও কেউ দেখেননি। তবে ওই যুবকের খোঁজে সব রকম তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলেই জানান ব্যারাকপুরের পুলিশ কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন