মেট্রোর থার্ড রেলে আগুন, দুর্ভোগ চরমে 

মেট্রোর পুরনো রেক নিয়ে সমস্যা ছিলই। এ বার থার্ড রেলে আগুন যেন তার দোসর হয়ে দেখা দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০২:৩৩
Share:

তৎপরতা: থার্ড রেলে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার, দমদমে। নিজস্ব চিত্র

মেট্রোর পুরনো রেক নিয়ে সমস্যা ছিলই। এ বার থার্ড রেলে আগুন যেন তার দোসর হয়ে দেখা দিয়েছে।

Advertisement

অফিসের ব্যস্ত সময়ে থার্ড রেলে ছড়িয়ে পড়া আগুন থেকে বৃহস্পতিবার দীর্ঘ সময় মেট্রো চলাচল ব্যাহত হল দমদমে। নোয়াপাড়া থেকে গিরিশ পার্কের মধ্যে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরিষেবা বন্ধ থাকায় সকালের দিকে বিপুল সংখ্যক যাত্রী চরম ভোগান্তিতে পড়েন। দমদম ছাড়াও, বেলগাছিয়া, শ্যামবাজারের মতো একাধিক স্টেশনে দীর্ঘ ক্ষণ মেট্রো না পেয়ে যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ে। ঘণ্টা দেড়েক পরে মেট্রো চলাচল শুরু হলেও ভিড়ের রেশ থাকে আরও অনেক ক্ষণ। নির্ধারিত সময় অন্তর মেট্রো চলাচল না করায় উত্তর কলকাতার বিভিন্ন স্টেশনের মতো দক্ষিণেও টালিগঞ্জ, কালীঘাট, রবীন্দ্রসদন-সহ একাধিক স্টেশন যাত্রীদের ভিড়ে থিক থিক করতে থাকে। যাত্রীদের একাংশ মেট্রোর ভিড়ে ঠাসা কামরায় জোর করে উঠতে চাওয়ায় দরজা বন্ধ হওয়া নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। ভিড়ের কারণে এ দিন সেন্ট্রাল, চাঁদনি চক, এসপ্লানেড, রবীন্দ্রসদন, কালীঘাট, টালিগঞ্জ-সহ বেশ কয়েকটি স্টেশনে মেট্রোর দরজা বন্ধ করতে গিয়ে অতিরিক্ত সময় নষ্ট হয়। বাতানুকূল কামরায় ভিড়ের চাপে যন্ত্র ঠিকমতো কাজ করেনি বলেও অভিযোগ অনেক যাত্রীর। সকালের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে না হতেই দুপুরের দিকে ফের দমদমে আগুনের কারণ খতিয়ে দেখার জন্য আধঘণ্টা মেট্রো পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। তাতে আর এক দফা ভোগান্তি বাড়ে যাত্রীদের।

মেট্রো সূত্রের খবর, ট্রেন চলাচলে সমস্যার জেরে কোনও স্টেশনে অনেক যাত্রী আটকে পড়লে সেখান থেকে বিশেষ ট্রেন চালিয়ে মাঝেমধ্যে ভিড় হাল্কা করার ব্যবস্থা হয়। কিন্তু এ দিন অন্যতম প্রান্তিক স্টেশন দমদমে ভিড়ের চাপ প্রচণ্ড হাওয়ায় ওই ব্যবস্থা কার্যকর করা যায়নি। ফলে সকালের ভোগান্তির রেশ দুপুর পর্যন্ত চলে। পরে দমদম থেকে পরপর ট্রেন ছেড়ে কোনও মতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়।

Advertisement

কেন এই বিভ্রাট?

মেট্রো সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ নোয়াপাড়া থেকে দমদমের দিকে যাওয়ার সময়ে এসি-৫ মেট্রো রেকের চালক প্ল্যাটফর্মে (দমদম স্টেশনের) ঢোকার মুখে থার্ড রেলে স্ফুলিঙ্গ এবং ধোঁয়া দেখতে পান। ওই সময়ে ট্রেনের মধ্যেও বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা দেখা দেয়। সমস্যা আঁচ করে চালক সঙ্গেসঙ্গে ট্রেন থামান। দমদম স্টেশনে এবং মেট্রোর কন্ট্রোল রুমে খবর দেন। এর পরে থার্ড রেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আগুন নেভান মেট্রোকর্মীরা। কামরায় আটকে পড়া যাত্রীদের পরে চালকের কামরার দরজা খুলে বার করে আনা হয় তাঁদের। যাত্রীদের প্রায় ৩০ মিটার পথ হেঁটে আসতে হয়। তবে মাটির উপরে ওই ঘটনা ঘটায় বড় বিভ্রাট এড়ানো গিয়েছে বলে মত মেট্রোকর্মীদের একাংশের। সুড়ঙ্গে ওই সমস্যা হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হত বলেই বক্তব্য তাঁদের।

মেট্রোর আধিকারিকদের একাংশের মতে, এ দিন থার্ড রেলের সঙ্গে সংযোগকারী বিদ্যুতের কেবলের ইনসুলেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শর্ট সার্কিট থেকেই ওই বিপত্তি ঘটে। কেবলের বেশ কিছু অংশ পুড়েও যায় বলে খবর। তবে ঠিক কী কারণে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘মেট্রোর সুরক্ষা আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে সিগন্যালিং এবং

ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ঘটনার তদন্ত করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন