ন্যাশনাল মেডিক্যালে আগুন

হাসপাতালের ওই ব্লকের বাইরের অংশে রং করার জন্য বাঁশ বাঁধা হয়েছে। আগুনের তীব্রতার জেরে ওই বাঁশও আংশিক ভাবে পুড়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১৬
Share:

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরে ওয়ার্ডে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে রোগীদের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: সুমন বল্লভ

বুধবার রাত থেকে রোগী-চিকিৎসক গোলমালে উত্তপ্ত ছিল হাসপাতাল চত্বর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফের শুরু হয় নতুন উত্তেজনা।

Advertisement

শৌচালয়ে আগুন লাগলে এ দিন সন্ধ্যায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়ায়। একাধিক বিভাগের রোগীদের ওয়ার্ড থেকে নামিয়ে আনা হয়। দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন পরিজনেরাও।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ আগুন লাগে ওই হাসপাতালের রামমোহন ব্লকের তিনতলার শৌচালয়ে। কিছু ক্ষণের মধ্যে সেই আগুনের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে পাশে পুরুষদের মেডিসিন ওয়ার্ডে। শৌচালয়ের জানলা দিয়ে বেরিয়ে আসা আগুনের শিখা দেখে বাইরে থেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রোগীদের পরিজনেরাও।

Advertisement

এ দিকে, হাসপাতালের ওই ব্লকের বাইরের অংশে রং করার জন্য বাঁশ বাঁধা হয়েছে। আগুনের তীব্রতার জেরে ওই বাঁশও আংশিক ভাবে পুড়ে যায়।

নিরাপত্তার কথা ভেবে হাসপাতালের কর্মীরা রোগীদের নীচে নামাতে শুরু করেন। কাউকে হাতে স্যালাইন, কাউকে আবার ক্যাথিটার পরানো অবস্থাতেই নামিয়ে আনা হয়। শৌচাগারে আগুন লাগলেও ওই ব্লকের সিঁড়ি ছিল বিপন্মুক্ত।ফলে রোগীকে সরাতে অসুবিধা হয়নি বলে জানান হাসপাতালের কর্মীরা। যদিও চিকিৎসাধীন এক রোগীর আত্মীয় সোমনাথ তাঁতি বলেন, “কোনও মতে আমার দাদাকে উপর থেকে নামিয়েছি।”

দমকলের গাড়ি পৌঁছনোর আগে স্থানীয় যুবকেরাই কার্নিস বেয়ে উঠে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। হাসপাতালে থাকা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা হলেও আগুন নেভেনি। ঘটনার প্রায় আধঘণ্টা পরে পৌঁনে পাঁচটা নাগাদ পৌঁছয় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। পঁয়তাল্লিশ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। শৌচাগারে বিদ্যুতের ওয়্যারিং পুড়ে যায়। আগুন নেভার পরে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে তিনতলার ওই ওয়ার্ড। রোগীদের আর ওই ওয়ার্ডে ফেরানো যায়নি। তাঁদের দুই ও চারতলায় স্থানান্তরিত করা হয়।

কিন্তু আগুন লাগল কী ভাবে? এক হাসপাতাল কর্মী বলেন, “রোগীদের একাং‌শ হাসপাতালের শৌচাগারে ডায়াপার, তুলো, গজ ইত্যাদি ফেলেন। অনেক ক্ষেত্রে তা সময়মতো পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। জঞ্জালের শুকনো স্তূপ থেকে আগুন ছড়িয়ে থাকতে পারে।” তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দমকলকর্তা পার্বতীশঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “কী ভাবে আগুন লাগল, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।”

প্রসঙ্গত, মাস কয়েক আগে আর জি কর হাসপাতালেও একই ভাবে শৌচাগারে জমা করা জঞ্জাল থেকে আগুন ছড়ায়। তার পরেও হাসপাতালগুলিতে যে যথেষ্ট সচেতনতা তৈরি হয়নি, এ দিনের ঘটনায় তা স্পষ্ট। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন