প্রতীকী ছবি।
কেউ সবেমাত্র খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুমোতে গিয়েছেন। কেউ আবার গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। আচমকাই চেঁচামেচি, সঙ্গে কালো ধোঁয়ায় দম আটকে আসায় ধড়মড় করে উঠে বসেন বাসিন্দারা। তাড়াহুড়ো করে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন সকলে। রবিবার রাতে ডানলপের একটি শপিং কমপ্লেক্সের দোতলার গুদামে অগ্নিকাণ্ডের জেরে এমন আতঙ্ক ছড়ায়।
যদিও ওই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই। তবে আবাসনের দোতলার ওই গুদামটি পুরো পুড়ে গিয়েছে। দমকলের চারটি ইঞ্জিন প্রায় তিন ঘণ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। প্রাথমিক ভাবে দমকল আধিকারিকদের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে।
পুলিশ ও দমকল সূত্রের খবর, ডানলপ মোড়ের কাছেই রয়েছে বিক্রম সুপার মার্কেট। চারতলা ওই আবাসনের ‘বি’ ব্লকের একতলা ও দোতলায় দোকান। বাকি দু’টি তলে আবাসিকেরা থাকেন।
দোতলাতেই দু’টি ঘর নিয়ে রয়েছে ম্যাজিকের সরঞ্জাম তৈরির একটি কারখানা ও গুদাম। রবিবার রাত সওয়া ১২টা নাগাদ স্থানীয় কয়েক জন যুবক আচমকাই ওই গুদাম থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন। মুহূর্তে চার দিক কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। ওই আবাসন-সহ আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা আতঙ্কে রাস্তায় নেমে আসেন। খবর পেয়ে আসে পুলিশ। ডানলপ ও কামারহাটি দমকল কেন্দ্র থেকে পৌঁছয় ইঞ্জিন। বড় বিপত্তি এড়াতে সিইএসসি-র কর্মীরা এসে গোটা এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে পড়ি। কিন্তু ধোঁয়ায় খুব কষ্ট হচ্ছিল। কোথা থেকে ধোঁয়া আসছে দেখতে বারান্দায় আসি। তখনই বুঝতে পারি নীচে আগুন লেগেছে। কোনও মতে সকলে বেরিয়ে আসি।’’ স্থানীয়েরা জানান, প্রতি দিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ওই কারখানা ও গুদাম বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১০টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় বাকি সব দোকানও। রবিবারও তাই হয়েছিল।
দমকল জানায়, প্রথমেই ওই গুদাম ও কারখানার সব কাচ ভেঙে জল দেওয়া হয়। এর পরে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে জল ঢালা হয়। পাশাপাশি, তিন ও চারতলায় কেউ আটকে পড়েছেন কি না, তা-ও দেখা হয়। ওই আবাসনের বিদ্যুতের লাইনগুলি বিপজ্জনক ভাবে রয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ওই আবাসনের পাশেই থাকেন বিভু প্রজাপতি। তিনি বলেন, ‘‘আবাসনের ভিতরে পুরো তারের জঙ্গল। ঘিঞ্জি এলাকা। তাই আগুন দ্রুত ছড়ানোর ভয়ে সবাই বেরিয়ে পড়ি।’’ ওই দোকান এবং গুদামের দমকলের ছাড়পত্র বা ট্রেড লাইসেন্স ছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুরসভা।